সিলেট ও রংপুরে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উদযাপন

প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

সিলেট : ১৭ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে গতকাল সোমবার সিলেট অঞ্চলে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উদযাপন করা হয়। দিবস উপলক্ষ্যে সিলেট Peacekeepers Runসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ১৭ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার সিলেট এরিয়া মেজর জেনারেল চৌধুরী মোহাম্মদ আজিজুল হক হাজারী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সামরিক ও অসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, অত্র ফরমেশনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ১৭ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার সিলেট এরিয়া বেলুন এবং শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের আত্মত্যাগ ও বীরত্বের কথা উল্লেখ করে বলেন, পঁয়ত্রিশ বছর ধরে শৃঙ্খলা, সততা, সামরিক পেশাগত দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, আনুগত্য, সাহসিকতা, পেশাদারিত্ব, কর্তব্য নিষ্ঠা এবং স্থানীয় জনগণের ভালোবাসা ও আস্থা অর্জন, মানুষকে আপন করে নেয়ার প্রবণতা এবং অভিজ্ঞতার বাস্তব প্রয়োগের ফলে আজ বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্ব শান্তি রক্ষায় আদর্শ হিসাবে স্বীকৃত। বিশ্বের শান্তি রক্ষায় আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশ বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনী দেশপ্রেম, উঁচু মনোবল ও বিশ্ব শান্তিতে অবদান রাখার প্রত্যয়ে বিরূপ পরিবেশ, শান্তিরক্ষা ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কার্যক্রম ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য সদা প্রস্তুত। ভবিষ্যতেও এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করনে।

রংপুর : ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে গতকাল সোমবার রংপুর অঞ্চলে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উদযাপন করা হয়। দিবস উপলক্ষ্যে রংপুরে Peacekeepers Runসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ৬৬ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার রংপুর এরিয়া মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সামরিক ও অসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, অত্র ফরমেশনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের অনুষ্ঠান শুরু হয় Peacekeepers Runএর মধ্য দিয়ে যা রংপুর জেলা স্কুল মাঠ থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে শেষ হয়। Peacekeepers Run শেষে উপস্থিত সবাই সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। এরপর জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ৬৬ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার রংপুর এরিয়া বেলুন উড়িয়ে এবং শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্ত করার মাধ্যমে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করা সব শান্তিরক্ষীর স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সবশেষে দিনটির তাৎপর্য এবং গুরুত্ব বর্ণনা করে প্রধান অতিথি তার মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেন। বক্তব্যের শুরুতে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের শাহাদাৎ বরণকারী সব সদস্যের কথা পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, এ বছরের আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এ বছর আমরা জাতির পিতার ‘জুলিও কুরি শান্তি পদক’ প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করছি। জাতির পিতা বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলন এবং বিশ্ব শান্তির স্বপক্ষে অবদানের জন্য ১৯৭৩ সালের ২৩ মে তারিখে এই পদকে ভূষিত হন।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে আরো বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সেনাসদস্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অবদান রেখে যাচ্ছে। শান্তিরক্ষার এই সুমহান দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন সময়ে সশস্ত্র বাহিনীর ১৪৪ জন ও পুলিশ বাহিনীর ২৩ জন সদস্য জীবনোৎসর্গ করেছেন এবং সশস্ত্র বাহিনীর ২৪৭ জন ও পুলিশ বাহিনীর ১২ জন সদস্য পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তিনি জাতির সেই সব অকুতোভয় শান্তিরক্ষীদের মহান আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনাসহ তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।