ক্ষেতমজুর কৃষক সংগঠনের বিক্ষোভ

প্রকাশ : ০৬ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রংপুর ব্যুরো

বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠন, রংপুর জেলা শাখার উদ্যোগে গতকাল সোমবার দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কাচারীবাজারে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সদস্যসচিব আহসানুল আরেফিন তিতু, সংগঠক সিদ্দিক মিয়া, দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ। সমাবেশে কমরেড আনোয়ার হোসেন বাবলু বলেন, বাংলাদেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ কৃষির সঙ্গে যুক্ত।

স্বাধীনতার ৫২ বছরে পুঁজিবাদী শ্রেণির স্বার্থ রক্ষাকারী সরকারগুলো তাদের শাসনে এ দেশের কৃষি-কৃষককে ধ্বংস করে দিয়েছে। কৃষিপ্রধান দেশকে কৃষিপণ্যের আমদানিনির্ভর দেশে পরিণত করেছে। ফলে ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ হলে দেশের মানুষ খাদ্য সংকটে পড়ে। এ অবস্থা থেকে দেশকে বাঁচাতে হলে কৃষি-কৃষককে বাঁচাতে হবে। আর কৃষি-কৃষককে বাঁচাতে হলে বাজেটে উন্নয়ন অংশের ৪০ ভাগ কৃষি খাতে বরাদ্দ করতে হবে এবং মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণের জন্য কৃষি উপকরণ ও ফসলের বাজারজাতকরণের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিতে হবে। সেই সঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানো, ১০ টাকায় ওএমএস-এর চাল, শহরে কম দামে পর্যাপ্ত টিসিবি কার্যক্রম সারা বছর চালু রাখা, দলীয়করণ-হয়রানি বন্ধ করা, আর্মির রেটে রেশন দিতে হবে।

ধান, ভুট্টা, আলুসহ সব কৃষি ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, সরকারি উদ্যোগে ক্রয় কেন্দ্র খোলা, ইউনিয়নে খাদ্য গুদাম, জেলায় হিমাগার নির্মাণ করতে হবে। কৃষিঋণ মওকুফ করা, সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার, বিনা সুদে সহজ শর্তে ঋণ দান, এনজিও মহাজনি ঋণের তীব্র অমানবিক শোষণ জুলুম আইন করে নিষিদ্ধ করা, কিস্তির হয়রানি বন্ধ করতে হবে। সব বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা ও প্রতিবন্ধীদের মাসিক ভাতা ৫০০০ টাকা দেয়া, এলাকায় এলাকায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ইউনিয়ন হেলথ সেন্টারে এমবিবিএস ডাক্তার, নার্স, নিয়োগসহ পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ করতে হবে। ভূমি অফিস, রেজিস্ট্রি অফিস, ইউনিয়ন/পৌরসভা, তথ্য অফিস, থানাসহ সব সরকারি অফিসে ঘুষ-দুর্নীতি, হয়রানি বন্ধ, জন্মনিবন্ধন, মৃত্যু সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে হয়রানি দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। ক্ষেত মজুরদের সারা বছর কাজের নিশ্চয়তা, ১২০ দিনের কর্মসৃজন টিআর, কাবিখা-কাবিটা চালু করতে হবে। হাটে হাটে ইজারাদারি জুলুম বন্ধ, সরকারি টোল চার্ট লাগানো, অনিয়ম দুর্নীতি হয়রানি বন্ধ করতে হবে। মাদক, জুয়া, পর্নোগ্রাফি বন্ধ করে সামাজিক অবক্ষয় রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, নারী-শিশু নির্যাতন, বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে হবে। সদস্যসচিব আহসানুল আরেফিন তিতু বলেন- পল্লী বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিং বন্ধ, ভূতুড়ে বিল, দুর্নীতি, হয়রানি বন্ধ করে বিনা পয়সায় সংযোগ দেয়া, মিটার ভাড়া বাতিল করতে হবে। খাস জমি উদ্ধার করে প্রকৃত ভূমিহীনদের মাঝে বণ্টন করে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। বেকার সমস্যার সমাধানে জেলায় জেলায় কৃষিভিত্তিক সরকারি শিল্প কারখানা নির্মাণ, বন্ধকৃত পাটকল, চিনিকল অবিলম্বে চালু করতে হবে।