সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে পাড়ায় পাড়ায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনাও ঘটেছে। গত রোববার রাতে এর পুনরাবৃত্তি ঘটে। এবার কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন প্রতিপক্ষের আদাম মিয়া (২২) নামে এক যুবক। রোববার রাত ১টার দিকে নগরের চৌখিদেখি পেট্রল পাম্প সংলগ্ন ফিজা অ্যান্ড কোং আউটলেটের সামনের সড়কে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
আহত আদাম মিয়া নগরের আম্বরখানা ৬২/৩ মজুমদারী আবাসিক এলাকার খোকন মিয়ার ছেলে। তিনিও স্থানীয় একটি কিশোর গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ওই এলাকার কিশোর গ্যাংদের দুটি গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা চলে আসছিল। এরই জেরে রোববার রাতে প্রতিপক্ষ গ্রুপের কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা আদামকে ছুরিকাঘাত করে। দুর্বৃত্তরা তার পেটের পেছনের অংশে ডানদিকে ছুরিকাঘাত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার দেহে অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাতেই ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সিলেট মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসি মঈন উদ্দিন সিপন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, পূর্ববিরোধ থেকে ওই যুবককে প্রতিপক্ষ ছুরিকাঘাত করে। তাকে রাতেই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা না গেলেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এর আগে গত ৭ এপ্রিল নগরের রিকাবীবাজার এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা দুই তরুণকে ছুরিকাঘাত করে। আহতরা হলেন নগরীর মুন্সীপাড়ার বাসিন্দা শেখ আশরাফুল আলম নাসিরের ছেলে শেখ ফাহিয়ান ফেরদৌস ও নগরীর হাউজিং এস্টেট ৬১ নম্বর বাসার সালেহ আহমদের ছেলে শাফিন আহমদ শাফি।
তারও আগে গত ৩১ মার্চ রাত ৮টার দিকে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে সজিব আহমেদ ইয়াছিন (১৮) নামে এক যুবক আহত হন। তিনি স্থানীয় ইসলামপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে।
এছাড়া ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি সিলেটের জল্লারপাড় ওয়াকওয়েতে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে আরমান হোসেন (১৭) নামে এক কিশোর খুন হয়েছেন। নিহত কিশোর আরমান হোসেন সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে। তার বাবা নগরের ফুটপাতে ছিন্নমূল ব্যবসায়ী। সে সুবাদে তারা নগরের জল্লারপার জামতলায় একটি কলোনিতে সপরিবারে ভাড়া থাকতেন। এবার নগরের আম্বরখানা এলাকায় আবারো রক্তপাত ঘটালো কিশোর গ্যাং। ঘটনার পর অনেকটা নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন। অপরাধীদের ধরতে চালানো হয়েছে অভিযান। এ বিষয়ে জানতে মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ না করায় প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।