ঢাকা ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পুরান ঢাকার ডিআইটি পুকুর দখলমুক্ত করা হবে : তাপস

পুরান ঢাকার ডিআইটি পুকুর দখলমুক্ত করা হবে : তাপস

পর্চা অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করে পুরান ঢাকার ডিআইটি পুকুর দখলমুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। গতকাল বুধবার মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়াল সেতুর নিচে সৌন্দর্যবর্ধনের লক্ষ্যে গৃহীত কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরেজমিন পরিদর্শন শেষে রাজধানী সুপার মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মেয়র তাপস এ কথা বলেন। তাপস বলেন, ‘ওই জমিটা (ডিআইটি পুকুর) নিয়ে আমরা এরইমধ্যে আমাদের সম্পত্তি বিভাগকে জরিপ করতে বলে দিয়েছি। সেটা সম্পত্তি বিভাগ জরিপ করে দেখবে। জমিটার স্বত্ব অনেকেই দাবি করছে। সে বিষয়টা সত্য নাকি। আমার ধারণা সেটা সত্য নয়। যদি সত্য না হয়ে থাকে তাহলে সে বিষয়টা খতিয়ে দেখে আমরা রাজউকের সঙ্গে কথা বলে সেটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেব। কেউ এটা দখল করতে পারবে না। আমরা পুরোটা আবার দখলমুক্ত করে পর্চা অনুযায়ী, মানচিত্র অনুযায়ী পুকুরের যে সীমানা- তা নির্ধারণ করে আমরা পুরোটা দখলমুক্ত করব এবং সেখানে সৌন্দর্যবর্ধন করব।’

বিভিন্ন সংস্থার কাছে থাকা জলাশয়, পুকুর আইন অনুযায়ী করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর না করায় দখলের আগ্রাসন বেড়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তাপস বলেন, আমরা কিন্তু রাজউককে জানিয়েছিলাম যে, এটা দখলমুক্ত করতে অথবা আমাদের কাছে হস্তান্তর করতে। কারণ, সকল জলাশয়-পুকুর সংরক্ষণ করা কিন্তু সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব-কর্তব্য। কিন্তু এখনো বিভিন্ন জলাশয়, পুকুর অনেক সংস্থার কাছে রয়ে গেছে। যার কারণে আমরা যথাযথ তড়িৎ ব্যবস্থা নিতে চাইলেও কিন্তু নিতে পারছি না। যেমন খিলগাঁওয়ের তালতলা ঝিল। সেটাও কিন্তু আমাদের কাছে হস্তান্তর করার জন্য আমরা গণপূর্তের কাছে আবেদন করে বসে আছি। সেটাও দখল হচ্ছে। দিনে দিনে দখলের আগ্রাসন আরো বেড়ে যাচ্ছে। রোকনপুর সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল এবং সেটির সংস্কার কাজ চলছে। সংস্কার কাজ শেষ হলেই ডিআইটি পুকুর পাড়ে আর কোনো কাউন্সিলর কার্যালয় থাকতে পারবে না বলে তাপস জানান। জনগণের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় উড়াল সেতুর নিচে সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে জানিয়ে তাপস বালেন, এই উড়াল সেতুর নিচে যে পরিবেশ রয়েছে, সেটাকে কীভাবে উন্নয়ন করা যায় তা ঢাকাবাসীর অনেক দিনের প্রাণের দাবি। দীর্ঘদিন ধরে এটা অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে। সেটার প্রেক্ষিতে আমরা পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছি। পরামর্শকদের সাথেই পুরো এলাকাটা হেঁটে হেঁটে আমরা দেখছি। কোন জায়গায় কি চাহিদা, কোন জায়গায় এলাকাবাসীর কি প্রয়োজন রয়েছে- সেটাকে মাথায় নিয়ে এখানে কীভাবে সৌন্দর্যবর্ধন করা যায় সে বিষয়টা আমরা খতিয়ে দেখছি। আপনারা জানেন, মেয়র হানিফ উড়াল সেতুর দৈর্ঘ্য প্রায় ১১ কিলোমিটার। এটাকে আমরা আট ভাগে ভাগ করেছি। এর আগে আমরা চারটি অংশে পরিদর্শন করেছি। আজকে আমরা দুটি অংশ পরিদর্শন করছি। আপনারা দেখেছেন এই পুরো এলাকাটায় আমরা মনে করি কিছুদিনের মধ্যে পরিবর্তন হয়ে যাবে এবং ঢাকাবাসী উপকৃত হবে। এ সময় মগবাজার উড়াল সেতুর নিচে পুলিশের গাড়ি সরানো হবে কি না সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাপস বলেন, মগবাজার উড়াল সেতুর নিচের অংশসহ আমরা ঢাকা শহরের পুরো অংশে যে উড়াল সেতু রয়েছে, তার নিচে আমরা কাজ আরম্ভ করেছি। এখানে আমরা মগবাজার অংশে কাজ আরম্ভ করেছি। সেখানে একটি শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে বসার জায়গা করা হবে। মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেল রাখার জায়গা করা হবে। এখানে যত্রতত্র কিছু পুলিশের গাড়ি রাখা হয়েছে। সেগুলো আলামত হিসেবে ব্যবহার করে। সেগুলো আমরা তাদের সরিয়ে ফেলতে বলেছি। তারা দু’একদিনের মধ্যেই সরিয়ে ফেলবে। আমরা পুরো এলাকাটা নিয়ে আমাদের কাজগুলো সম্পন্ন করব।” এর আগে তাপস মগবাজার উড়াল সেতুর নিচে চলমান কাজ ও পরে ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের নর্দমা পরিষ্কার কার্যক্রম, ধোলাইপাড় দয়াগঞ্জ রেল ব্রিজ পর্যন্ত বক্স কালভার্ট পরিষ্কার কার্যক্রম এবং ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের নর্দমা পরিষ্কার কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এ সময় অনদের মধ্যে করপোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো. বোরহান উদ্দিন, অঞ্চল-৫ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম জয়, ৩৯ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রোকন উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত