রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের গোপিডাঙ্গা মৌলভীবাজার এলাকায় ৮ বছরেও সেতুর কাজ শুরু হয়নি। এলাকাবাসী নড়বড়া ভাঙা সেতু ধরি চলাফেরা করে। পাকা সেতু আছে রাস্তা নেই। সেতুর দুই পাশে বাঁশের জোড়া দিয়্যা সাঁকোতে ১০ গ্রামের মানুষ চলাচল করে। বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের গোপিডাঙ্গা মৌলভীবাজার এলাকায় সরেজমিন দেখা গেছে, বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ পাকা সেতুটির দুইপাশে কোনো রাস্তা নেই। সেতুটির একপাশ হেলে যাওয়ায় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সেতুটির দুইপাড়ে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালে ইউএসএআইডি ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে কেয়ার বাংলাদেশের সহযোগিতায়, এলজিইডির বাস্তবায়নে ৩৭ লাখ ২৪ হাজার ১৮৩ টাকা ব্যয়ে গোপিডাঙ্গা মৌলভীবাজার এলাকায় পাকা সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ২০১৪ সালের জুন মাসে সেতুটি উদ্বোধন করেন কাউনিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়া।
সেতুটি নির্মাণের কারণে এলাকার কৃষকরা সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলেন। দুই বছর এলাকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহন ও যাতায়াত সুবিধায় লাভবান হন তারা। এরপর বছরে বছরে বন্যার সময়ে তিস্তার পানির তোড়জোড়ে সেতুটির দুইপাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে যায়।
দীর্ঘদিন অপেক্ষার পরও সেতুটির সংযোগ সড়ক সংস্কার বা নতুন করে তৈরি না করায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে যাতায়াত সুবিধা বিঘ্নিত হওয়ায় আশপাশের ১০ গ্রামের মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় সেতুর দুইপাড়ে সাঁকো তৈরি করা হলেও সেটির এখন বেহাল দশা।
স্থানীয় মোহাম্মদ আলী জানান, প্রতিবছর সেতুর দুই পাড়ের মাটি সরে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। আর জনগণের দুর্ভোগ আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সাহেব দেখেন না।
গ্রামের স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী নাবিল হাসান বলেন, চরের শিক্ষার্থীদের সমস্যার খবর কেউ রাখে না। আমাদের মন্ত্রী আছে কিন্তু লাভ নেই। আট বছরেও সেতুটির কোনো সংস্কার কাজ হয়নি।
বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য (মেম্বার) হাফিজার রহমান বলেন, সেতুর সংস্কার ও সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতনদের একাধিকবার বলেছি। কিন্তু বাজেটে অর্থ বরাদ্দ না পাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে সেতুটির কোনো গতি হচ্ছে না।
ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, গত কয়েক বছর সেতুর দুইপাড়ে মাটি কেটে ভরাট করেছি। আবারও বন্যায় ভেঙে গেছে। নড়বড়ে পাকাসেতুটি ভেঙে ফেলে নতুন করে সেখানে সেতু নির্মাণের জন্য প্রকৌশল দপ্তরে ৪ বার আবেদন করেছি। কিন্তু এখনো কোনো অগ্রগতি নেই।
উপজেলা প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জেমি জানান, সেতুটি নতুন করে নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কেন কাজ হচ্ছে না, তা জানি না। প্রয়োজনে বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আবারো নতুন করে প্রস্তাবনা পাঠানোর আশ্বাস দেন তিনি।