জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নামে প্রতারণা

প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন নামের একটি বেসরকারি সংস্থার লোকজন তাদের সংস্থার নামের সাথে ‘কমিশন’ শব্দটি ব্যবহার করে দেশে-বিদেশে, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার নিকট উক্ত সংস্থাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংস্থা- মর্মে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। দেশের জনসাধারণ এমনকি সরকারি-বেসরকারি সংস্থা এমনকি গণমাধ্যমও নামসর্বস্ব ভুঁইফোঁড় মানবাধিকার সংগঠনের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। গতকাল দুপুর ২.৩০ ঘটিকায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সম্মেলন কক্ষে মানবাধিকার কমিশনের নামে বিভিন্ন বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা প্রতারণার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে এসব কথা বলেন, ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা, সচিব নারায়ণ চন্দ্র সরকার, পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) মো. আশরাফুল আলম, পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) কাজী আরফান আশিক, উপ-পরিচালক এম. রবিউল ইসলাম এবং উপ-পরিচালক ফারহানা সাঈদ। ‘বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন’ তার নামের শেষে ‘কমিশন’ শব্দটি এবং নামের সংক্ষিপ্ত রূপ হিসেবে ইঐজঈ শব্দটি ওয়েবসাইট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং প্রিন্ট মিডিয়া কোথাও ব্যবহার করতে পারবে না- মর্মে মহামান্য হাইকোর্ট রুল নিশি জারি করে ও নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করে, যা আপিল বিভাগও বহাল রাখে। ফলে কথিত ‘বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন’ নামে কোনো কার্যক্রম চালালে তা অবৈধ হবে। কিন্তু সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কথিত বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন নামক বেসরকারি সংস্থার মহাসচিব সাইফুল ইসলাম দিলদার ও তার লোকজন দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করা ও এর বিচার করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করা। এছাড়া ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য কর্তৃপক্ষকে পত্র প্রেরণ, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক নিবন্ধিত বলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সদস্য সংগ্রহ, কমিটি গঠন, যুক্তরাজ্যে মানবাধিকার কনভেনশনের নামে মানবপাচার কাজে প্রলুব্ধ করাসহ নানা অপতৎপরতা চালিয়ে জনসাধারণের সাথে প্রতারণা করছে।

বিজ্ঞ আদালত সংস্থাটির নামের শেষে ‘কমিশন’ ও সংক্ষেপে ইঐজঈ শব্দ দুটি কোথাও ব্যবহার করতে পারবে না- মর্মে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা সত্ত্বেও উক্ত আদেশ অমান্য করে ক্রমাগত তারা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ওয়েবসাইট (www.nhrc.org.bd) এর আদলে (www.bhrc.bd.org) ওয়েব সাইট তৈরি করতঃ ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করে যাচ্ছে। এছাড়া তারা (িি.িনযৎপ.নফ.ড়ৎম) ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে। এতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। সংস্থার মহাসচিব জনৈক সাইফুল ইসলাম দিলদার তাদের নিজস্ব ফেইসবুক পেইজ ও ওয়েব সাইট এ যুক্তরাজ্য মানবাধিকার কনভেনশন-২০২৩ নামে একটি গণবিজ্ঞাপন প্রচার করে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হবে বলে লোক সংগ্রহ করছে। সাইফুল ইসলাম দিলদার ও তাদের সহযোগীরা ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক প্রতারণার মাধ্যমে ফেইসবুক পেইজ ও ওয়েবসাইটে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জনসাধারণকে প্রতারণাপূর্বক ক্ষতিসাধনের লক্ষ্যে মানবপাচারের উদ্দেশ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রেসিডেন্ট/মহাসচিব/সচিব রূপে কর্মকাণ্ড করে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। উক্ত বিজ্ঞাপন গত ০৪/০৬/২০২৩ইং তারিখ কমিশনের নজরে আসে এবং অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা ও প্রচেষ্টা চালানোর জন্য দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৬ ধারা ও তৎসহ মানব পাচার আইনের ৮(১)/৮(২) ধারায় মামলা রুজু করা হয় এবং কথিত বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের মালিবাগের অফিসে অভিযান চালিয়ে মহাসচিব সাইফুল ইসলাম দিলদারসহ তার ছয়জন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়া, কমিশন শব্দ ব্যবহার করে আরো কিছু কথিত বেসরকারি সংস্থা বিভিন্ন তৎপরতা চালাচ্ছে। মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের আদেশ প্রতিপালনের নিমিত্ত নিবন্ধন বাতিলকৃত কথিত ‘বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন’ নামক বেসরকারি সংস্থার কার্যক্রমের বিষয়ে সতর্ক থাকার এবং উক্ত সংস্থার নামে পরিচালিত কার্যক্রমের বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজরে আনার জন্য গণমাধ্যমসহ সবাইকে অনুরোধ করা হলো।