চট্টগ্রামে ডেঙ্গু পরিস্থিতি
পাঁচ মাসে আক্রান্ত ২৩৯
প্রকাশ : ১৬ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামে চলতি বছরের শুরু থেকেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। বলা যায়, এবার সারা বছরই রয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। চলতি বছর ডেঙ্গুর সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে- এমন আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এরই মধ্যে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে মশা নিধনে তৎপর হওয়ার জন্য সিটি করপোরেশনকে চিঠি দিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩৯ জন। একই সময়ে গেল বছর ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ২৫ জন। চলতি বছর জানুয়ারিতে ৭৭, ফেব্রুয়ারিতে ২২, মার্চে ১২, এপ্রিলে ১৮, মে মাসে ৫৩ ও জুনের ১৪ দিনে আক্রান্ত হয়েছে ৫৭ জন। এ সময় মারা গেছেন ৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে নগরীতে ১৬২ ও উপজেলায় ৭৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১২১, মহিলা ৫১ ও শিশু ৬৭ জন। অপরদিকে, উপজেলা পর্যায়ে সীতাকুণ্ডে ৩৭, আনোয়ারা ও সাতকানিয়ায় ৫, বাঁশখালী, রাউজান, হাটহাজারী, মিরসরাই ও কর্ণফুলীতে ৪, লোহাগাড়া, পটিয়া, রাঙ্গুনিয়া ও সন্দ্বীপে ২ এবং চন্দনাইশ ও বোয়ালখালীতে ১ জন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘ডেঙ্গু হচ্ছে মশাবাহিত রোগ। গত বছরের চেয়ে এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেক বেশি। মশানিধন জোরদার করা না হলে এবার ডেঙ্গু পরিস্থিতি অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি ভয়াবহ হতে পারে। মশানিধনের জন্য ইতোমধ্যে সিটি করপোরেশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।’ সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে ২০২০ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ১৭ জন, ২০২১ সালে ২৭১ জন আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি মারা গেছে পাঁচজন। ২০২২ সালে ৫ হাজার ৪৪৫ জন আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি মারা গেছে ৪১ জন এবং চলতি বছর ২০২৩ সালের ১৪ জুন পর্যন্ত ২৩৯ জন আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি মারা গেছে তিনজন। মশানিধনে ওষুধ ছিটানো নিয়ে নগরবাসীরও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। নগরীর বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা মো. রুমেল চৌধুরী বলেন, ‘মশার ওষুধ ছিটানো কার্যক্রমে সিটি করপোরেশনের গতি নেই। ৩-৪ মাস পর একজন স্প্রে ম্যানকে এলাকায় দেখা যায়। তারা কোনো রকম দায়সারাভাবে ওষুধ স্প্রে করে চলে যায়। নিয়মিত স্প্রে না করার কারণে নগরীতে মশার উৎপাত বেড়েছে। কয়েল জ্বালিয়েও মশা তাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।’ এদিকে, গত ৪ জুন নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে মশানিধনে বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। নগরীর চকবাজার ওয়ার্ডের পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনে ফগার মেশিনে ওষুধ ছিটিয়ে ক্রাশ প্রোগ্রাম উদ্বোধন করেন প্যানেল মেয়র আফরোজা জহুর। আফরোজা জহুর বলেন, ‘আবহাওয়াগত কারণে নগরীতে মশার উপদ্রব বেড়েছে। আমাদের চারপাশে যে সমস্ত জায়গায় এডিস মশা জন্মায় সেই সমস্ত জায়গায় যাতে এডিস মশা জন্মাতে না পারে সেই ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সিটি করপোরেশন ও নগরবাসীর সমন্বিত উদ্যোগেই এডিস মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। মশা মুক্ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এ ক্রাশ প্রোগ্রাম বর্ষা মৌসুমজুড়ে ৪১টি ওয়ার্ডে চলমান থাকবে।’ এই প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহী বলেন, ‘বর্তমানে মশানিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম অব্যাহত আছে। নগরীর অলিগলি ও আবাসিক এলাকায় ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।’