সিলেটে ২১ দফা নির্বাচনি ইশতেহার

ঘোষণা আ.লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানের

প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সিলেট ব্যুরো

গ্রীন-ক্লিন-স্মার্ট সিলেট স্বপ্নপূরণে ‘আমরার সিলেট’-শিরোনামে ২১ দফা নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। গতকাল শনিবার সিলেট নগরীর নির্ভানা ইন হোটেলে আয়োজিত এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি। নিজে প্রবাসী হলেও নির্বাচিত হলে বাকি জীবন এখানে কাটাবেন বলে জানান যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। নির্বাচনি ইশতেহারে তিনি নারী বান্ধব এবং বন্যা ও জলাবদ্ধতামুক্ত নগরী গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। স্মার্ট বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে তার পরিকল্পনার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

নারীবান্ধব সিলেট নগরী : আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সিলেটে নারীরা যাতে নির্বিঘ্নেও স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারে, সেই লক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশন উদ্যোগী ভূমিকা পালন করবে। নারীরা যাতে সিটি কর্পোরেশন থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেবা পান, তার জন্য বিশেষ সেল তৈরি করা হবে। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এক বা একাধিক বিশেষায়িত মার্কেট নির্মাণ করা হবে। কর্মজীবী মায়েদের সুবিধার্থে আধুনিক ডে- কেয়ার সেন্টার কাম প্রি-স্কুল নির্মাণ করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

সবুজ, পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব সিলেট গঠন : আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি নির্মাণ এবং নগর পরিকল্পনায় সবুজকে প্রাধান্য দেয়া হবে। সবুজ সিলেট গড়ে তুলতে এলাকাভিত্তিক পরিকল্পিত বনায়ন করা হবে। নগর পরিকল্পনায় পরিবেশকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে। নগরায়ন হবে পরিবেশবান্ধব। বায়ু ও শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়া হবে। পাহাড়, টিলা ও জলাশয় রক্ষাসহ অকাল বন্যা থেকে সিলেট নগরকে রক্ষাকল্পে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে সিলেট নগরকে সবুজ, পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব নগরে রূপান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।

জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ : শহরকে অকাল বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সুরমা নদী খননে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। শহরের অভ্যন্তরীণ মালনিছড়া, যোগিনীছড়া, গোয়ালীছড়া, কালীবাড়ী ছড়া, মঙ্গলীছড়া, হলদিছড়া, ভুবিছড়া, ধোপাছড়া ও গাভীয়ার খাল নামের ৯টি ছড়া নগর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মিলিত হয়েছে সুরমা নদীতে। ছড়াগুলো উদ্ধার করে নদী পর্যন্ত এর পানি প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে। সিলেট শহরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার জন্য ফ্লাডওয়াল নির্মাণ, নতুন রেগুলেটর স্থাপন, ড্রেনেজ আউটলেট নির্মাণ করা হবে বলে জানান।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা : বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এলাকাভিত্তিক ময়লা সংরক্ষণ (ডাম্প) কেন্দ্র গড়ে তোলা, কাউন্সিলরদের মাধ্যমে গৃহস্থালি বর্জ্য সংগ্রহ, বর্জ্য রিসাইকেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও সারের মতো সম্পদ সৃষ্টি, আচ্ছাদিত পদ্ধতিতে বর্জ্য, যান্ত্রিক ভ্যাকুয়াম ট্রাক ক্রয় ও ব্যবহার, লোকালয় থেকে দূরে উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য সংরক্ষণের স্থান নির্ধারণ, ভোরের আগেই নগরীর বর্জ্য পরিষ্কার করা হবে বলে জানান তিনি।

পরিকল্পিত নগরায়ন : গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু ও যানজট নিরসন, অপ্রয়োজনীয় ডিভাইডার অপসারণ, নগরের যানজট নিরসন কল্পে প্রয়োজন মতো রাস্তা প্রশস্তকরণ, আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা গঠন, ট্রাফিক মনিটরিংয়ের জন্য জনবল বৃদ্ধি, যান চলাচলের জন্য লেন বিভাজন ও পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা, রিং রোড ও ফ্লাইওভার তৈরির মাধ্যমে যানজট নিরসনের স্থায়ী সমাধানে পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান তিনি। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আগামি ২১ জুন অনুষ্ঠিতব্য সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে স্বাধীনতা ও উন্নয়নের প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করার উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।