রাজউক নিজেই জলাশয় ভরাট করে হাউজিং করছে

বেলার সেমিনারে বক্তারা

প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আমাদের হাউজিংগুলো আকিকা করে নাম বদলে ফেলছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) সেখানে অসহায়। রাজউক নিজেই জলাশয় ভরাট করে হাউজিং করছে। অন্যদিকে মেয়রদের উন্নয়নের ধারণা জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতাও কাজ করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। রিজওয়ানা হাসান বলেন, ছোটবেলায় পড়েছি পানিই জীবন। এখন ঢাকায় মনে হচ্ছে বিল্ডিংই জীবন। গত ৫০ বছরে এই পরিবর্তন হয়েছে। আমরা পুকুর ও জলাধারের পানি কমে যাওয়ার কথা বলছি। অথচ আমাদের ভূগর্ভস্থ পানিও কিন্তু কমে যাচ্ছে। ভূগর্ভস্থ পানি কতটুকু কমে যাচ্ছে সেটার চিত্র সরকার আমাদের কখনো বলবে না। ভূগর্ভস্থ পানি ৩ থেকে ৫ মিটার পর্যন্ত নিচে নেমে গেছে। ফলে আমরা প্রায়ই দেখি এখন ছোট ছোট ভূমিকম্প হচ্ছে। তিনি বলেন, আগে ঢাকায় প্রতিটি বাসার সামনে বাগান থাকত, এখন সেটা দেখা যায় না। ঢাকা এখন বাগানবিহীন নগরীতে পরিণত হয়েছে। এত কিছু হলে আমাদের জলাধার আইন ও রাজউক দিয়ে কী হবে। ঢাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা জনগণ করবে, সেটার বাস্তবায়ন করবে সিটি কর্পোরেশন ও রাজউক। পুকুর, বিল ও লেকের তথ্যচিত্র তুলে ধরে রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের (আরডিআরসি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ঢাকায় পুকুর, বিল ও লেক আছে ৩২৭টি। বর্তমানে পুকুর আর বিল ২৪১টি ও লেক রয়েছে ৮৬টি। বর্তমানে পুকুর ভরাট করে দালানকোঠা নির্মাণ করা হচ্ছে। পুকুর তুলনামূলক ছোট হওয়ায় সহজেই দ্রুত দখল ও ভরাটের শিকার হচ্ছে। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ ছোট পুকুর দখল ও ভরাট করা হচ্ছে। ঢাকাকে বসবাসের উপযোগী করতে এসব জলাধার দখলমুক্ত করতে হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আহমাদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ঢাকাকে বসবাসের অযোগ্য বলা হচ্ছে। রাজধানীতে বসবাসের জন্য মানুষ যেখানে কমার কথা সেখানে জলাধার কমেছে আর মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। এখানে যদি পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো নগরীর ভালো মেয়রকেও আনা হয় তিনিও ঢাকা নগরীকে এখন বাসযোগ্য করা সম্ভব হবে না। আমাদের এখন দরকার জলাধার দখলমুক্ত করা। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক বজলুর রশিদ বলেন, অগ্নিনির্বাপণের জন্য পুকুর অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেসব এলাকায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে সেসব এলাকায় যদি পুকুর থাকে তাহলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সহজ হয়। তবে পুরান ঢাকায় এমনও বাসা রয়েছে, যেখানে গোসল করার পানি থাকে না।