কল্যাণপুরে হচ্ছে আরেক হাতিরঝিল

প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

আধুনিকতার ভিড়ে নতুন নতুন নানা ডিজাইনের দালানকোঠা গড়ে উঠছে ঠিকই। কিন্তু ইট-পাথরের এই শহরে বুকভরে শ্বাস নেওয়ার জায়গা কম গেছে। তবুও ব্যস্ততার মধ্যে একটু প্রশান্তির নিশ্বাস নেওয়ার জায়গা খোঁজেন নগরবাসী। এমন মানুষদের কাছে বেশ পছন্দের একটি স্থান রাজধানীর হাতিরঝিল। যেখানে চারপাশে রয়েছে বাহারি গাছগাছালি, বসার সুব্যবস্থা, আলোকসজ্জা ইত্যাদি।

এবার নগরবাসীর জন্য হাতিরঝিলের মতো কল্যাণপুরে আরেকটি বিনোদনের জায়গা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। এটি হবে মূলত জলকেন্দ্রিক ইকোপার্ক। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কল্যাণপুরের রিটেনশন পন্ড বা জলাধারকে হাতিরঝিলের মতো করে গড়ে তোলা হবে। এটি রাজধানীর জলাবদ্ধতা দূর করতেও কাজ করবে। এর ৫৩ একর জায়গা ঘিরে গড়ে তোলা হবে হাইড্রো ইকোপার্ক বা জলকেন্দ্রিক ইকোপার্ক। সব বয়সের মানুষের জন্য এ ইকোপার্ক করা হবে। শিশু, নারী, পুরুষ ও বয়স্ক- সব মানুষের জন্য সুবিধা থাকবে। এখানে থাকবে হাঁটার রাস্তা, সাইকেল লেন, শিশুদের খেলার জায়গা, কৃষি উদ্যান, প্রজাপতি ও পাখির অভয়ারণ্য, জীববৈচিত্র্যময় দ্বীপসহ নানা আয়োজন। এ প্রকল্পে মোট ১০টি অঞ্চল থাকবে। যার মধ্যে পাঁচটিতে থাকবে প্রকৃতির ছোঁয়া লাগানো পরিবেশ। যেখানে রাখা হবে প্রজাপতির উন্মুক্ত স্থান, জীববৈচিত্র্যময় দ্বীপ, পাখির আশ্রয়স্থল, জলজ পার্ক- সবগুলোতে থাকবে জলপথ। পর্যটকরা ১০টি অঞ্চলেই নৌযানে ঘুরতে পারবেন। ১৪টি পয়েন্ট দিয়ে এ হাইড্রো ইকোপার্কে সাধারণ মানুষ প্রবেশ করতে পারবেন। দিতে হবে না কোনো প্রবেশ মূল্য। পানির ওপর দিয়ে এবং পাশ দিয়ে থাকবে হাঁটার রাস্তা, সাইকেল লেন। তার পাশে থাকবে কৃষিজমি, কোল্ড স্টোরেজ, সৌর জল শোধনাগার। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, জলাধারের ৫৩ একর জায়গা অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে। এখন সেখানে মাটি খনন ও নকশা তৈরির কাজ চলছে। ভেকু মেশিনের সাহায্যে মাটি খননের কাজ হচ্ছে, পাশাপাশি আশপাশের সব ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৩০ লাখ ঘনফুট মাটি ও বর্জ্য অপসারণের কাজ করেছে ডিএনসিসির প্রকৌশল বিভাগ। এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ডে হাইড্রো ইকোপার্ক নির্মাণের লক্ষ্যে আমরা এখানে খননকাজ শুরু করেছি। এটি করতে গিয়ে আমাদের অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। সব বয়সের মানুষের জন্য এ ইকোপার্ক করা হবে। শিশু, নারী, পুরুষ ও বয়স্ক- সব মানুষের জন্য সুবিধা থাকবে। এখানে আমরা সিটি ফরেস্ট গড়ে তুলব। ‘প্রকৃতি নির্ভর ইকোপার্ক হবে। ফলে এটি যেমন সাধারণ মানুষের বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হবে, তেমনি রাজধানীর একটি বড় অংশের জলাবদ্ধতা নিরসন করবে। এ জলাধারে সব পানি গিয়ে জমা হবে, এরপর আমরা পাম্প করে তুরাগ নদে পার করে দেব।’ জানা গেছে, বর্তমানে হাইড্রো ইকোপার্কের নকশাসহ নির্মাণের প্রাথমিক প্রস্তুতি চলছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দিয়ে নকশা প্রণয়নের কাজ করছে সংস্থাটি। আগামী ২ বছরের মধ্যে এ জলকেন্দ্রিক ইকোপার্কের কাজ শেষ করতে চায় তারা।