ঢাকা ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বিপিএ’র সভা

পোলট্রি শিল্পের সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়ার দাবি

পোলট্রি শিল্পের সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়ার দাবি

পোলট্রি খাতের সিন্ডিকেট ভেঙে প্রান্তিক পোলট্রি খামারিদের রক্ষা ও খাবারের মূল্য কমানোর দাবিতে গাজীপুরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ভোগড়া বাসন সড়ক এলাকায় এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার। বিপিএ গাজীপুর শাখার সভাপতি অনিক সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আশরাফ হোসেন, বিপিএ’র সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার, বাপ্পি কুমার দে, সৈয়দ মুহাম্মদ আলী। বক্তারা বলেন, পোলট্রি শিল্পের নাভি বলা হয় গাজীপুরকে। প্রান্তিক খামারিদের মাধ্যমে পোলট্রি শিল্পের বিকাশ ঘটলেও এখন এই শিল্প হাতেগোনা গুটিকয়েক কর্পোরেট কোম্পানির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ২০৩১ সালে এসডিজি অর্জন করে ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশে প্রবেশ করতে হলে পোলট্রি শিল্পের দিকে সরকারকে নজর দিতে হবে। সরকারের এসডিজি অর্জনের ১৭ ধাপের ৭ ধাপ অর্জন হবে এ পোলট্রি শিল্পের ম্যাধ্যমে। আর এসডিজি লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে গুটিকয়েক কর্পোরেট সিন্ডিকেটের বিষদাঁত ভেঙে দিয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ভোক্তা ও সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে হবে। বক্তারা আরো বলেন, দেশে পোলট্রি শিল্প নিয়ন্ত্রণ করেন বাংলাদেশ পোলট্রি সেন্ট্রাল কাউন্সিল তথা প্যারাগন গ্রুপ, ব্রিডার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ কাজি ফার্মস গ্রুপ, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ, নারিশ এগ্রো। এ তিন অ্যাসোসিয়েশন ও কোম্পানি প্রান্তিক খামারিদের নিঃস্ব করে দিয়ে এ খাত নিজেদের দখলে নিচ্ছে। পোলট্রি শিল্পের বাজার ব্যবস্থা এরা যা চায়, পোলট্রি শিল্পে তাই হয়। তাদের তৈরি করা তথাকথিত আরো ৪টি অ্যাসোসিয়েশন আছে, যার দ্বারা কর্পোরেট গ্রুপগুলো তারাই প্রান্তিক খামারি ও তারাই কোম্পানি সেজে মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অফিসে মিটিং করে। সরকারের কাছ থেকে সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন তারা। কর্পোরেট গ্রুপ খামারি ও ডিলারদের কাছ থেকে ব্ল্যাঙ্ক চেক নিয়ে জিম্মি করে মিথ্যা মামলা দিয়ে উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি করে। বাজার সিন্ডিকেট করে যার প্রমাণ আগস্ট ২০২২ সালের ১৫ দিনে ৫১৮ কোটি ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে ৫২ দিনে ৯৩৬ কোটি টাকার ডিম মুরগির অযৌক্তিক দাম বাড়িয়ে বাজার থেকে লোপাট করে নিয়েছে। প্রান্তিক খামারিদের ১ কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। কর্পোরেট বাজার নিয়ন্ত্রণ করায় সেই মুরগি বিক্রি করতে হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। ১ কেজি মুরগিতে লস করতে হয় ৪০ টাকা। কর্পোরেট গ্রুপগুলোর স্বেচ্ছাচারিতায় অস্থির ডিম মুরগির বাজার। যখন খামারির মুরগি থাকে তখন দাম কমিয়ে দেয় যখন খামারিদের মুরগি থাকে না তখন দাম বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া ভুট্টার দাম যখন ৪১ টাকা ছিল তখন ৫০ টাকা কেজির বস্তা পোলট্রি ফিডের দাম ছিল ৩ হাজার ৭৩৫ টাকা, এখন ভুট্টার দাম ২৬ টাকা, ফিডের দাম হয়েছে ৩ হাজার ৬৫০ টাকা। ভুট্টাসহ সব পণ্যের দাম কমেছে ১২ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। তাই ফিড উৎপাদনের খরচ কম হলেও কোম্পানিগুলো ফিডের দাম কমাচ্ছে না। অনুষ্ঠানে প্রান্তিক খামারিদের মধ্যে শ্রীপুরের জাহাঙ্গীর আলম, কালিয়াকৈর উপজেলার আমজাদ হোসেন তাদের বক্তব্যে পোলট্রি খামারের ফিডের অসহনীয় দাম কমানো ও কোম্পানির সিন্ডিকেট ভেঙে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পুষ্টি রক্ষায় সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন। অনুষ্ঠানে পোলট্রি খামারি, ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেন। পরে বিপিএ গাজীপুর শাখার অফিস আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত