নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ঘুমন্ত স্ত্রীর পা ও সন্তানের মুখ অ্যাসিডে ঝলসে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামি খোকন মিয়াকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গত বুধবার রাতে কুমিল্লার তিতাসের রায়পুর পুরাণ বাতাকান্দি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব-১১ এর উপ-অধিনায়ক মেজর সানরিয়া চৌধুরীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তার খোকন মিয়া আড়াইহাজারের গোপালদী পৌরসভার গায়েনপাড়া এলাকার মৃত আনসার আলীর ছেলে। র্যাব জানায়, ২৩ জুন রাতে ঘুমন্ত মা ও শিশুর উপর অ্যাসিড নিক্ষেপের নৃশংস ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী মোর্শেদার (২২) প্রথম স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্ত হওয়ার পর তার কন্যা সন্তান মারিয়াসহ (৬) মোর্শেদার মায়ের বাড়িতে বসবাস করে আসছিল। ৫ মাস আগে মোর্শেদার সঙ্গে গ্রেপ্তার খোকনের বিয়ে হয়। এটি খোকনের তৃতীয় বিয়ে। বিয়ের পর থেকে শিশু মারিয়াকে তার নানির বাড়িতে রেখে আসার জন্য চাপ দেয় খোকন। এতে রাজি না হওয়ায় মোর্শেদাকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন তিনি। এরই জের ধরে বিয়ের ৩ মাস পর খোকন মোর্শেদাকে মারধর করে তার মায়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এরপর ২৩ জুন রাতে মোর্শেদা তার সন্তানসহ ঘুমিয়ে থাকাবস্থায় আসামি খোকন অজ্ঞাতনামা আরো ৩-৪ জনকে নিয়ে শয়ণকক্ষের খোলা জানালার কাছে উপস্থিত হয়। উপস্থিতির শব্দে ভিকটিম মোর্শেদা জানালার দিকে তাকিয়ে তাদের দেখে চিৎকার দেয়। এ সময় খোকন তার হাতে থাকা সিরিঞ্জ দিয়ে ভিকটিম মোর্শেদার ডান পায়ের উরুতে ও মারিয়ার মুখে অ্যাসিড নিক্ষেপ করে ঝলসে দেয়। তাদের আর্তচিৎকারে মোর্শেদার মাসহ আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় আহতদের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। বর্তমানে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় ভিকটিমের মা সাহেদা বেগম বাদী হয়ে গত ৪ জুলাই আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা করেন। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
