ঢাকা ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ৩১ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

লাইলি থেকে লিলি

প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব অনেকে

প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব অনেকে

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী ইউনিয়নের আইয়ুব আলীর কন্যা লাইলী বেগমের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়েছে একাধিক পরিবার। প্রতারণার শিকার হয়েছেন সহকারী শিক্ষাকর্মকর্তাসহ সাধারণ মানুষ। লিখিত অভিযোগ ও সংবাদ সম্মেলনের পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায়, ইকরচালী ইউনিয়নের উত্তরপাড়া গ্রামের আইয়ুব আলীর সুন্দরী কন্যা সুমনা আক্তার লিলি এলাকায় (লাইলি) নামে পরিচিত। হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা লাইলি স্কুল জীবনে বিয়ে করেন তার পার্শ্ববর্তী গ্রামের দরিদ্র পরিবারের শাহাজাহান আলীর ছেলে নুরুলকে। সেই সংসারে সিয়াম নামের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। সে বর্তমানে ইকরচালী ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।

নুরুলের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার মা নুরবানু বেগমের সঙ্গে। লাইলি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের সংসারে লাইলির এক ছেলে সন্তান আছে। লাইলি বেগম বিয়ের কিছু দিনের মধ্যে আমার ছেলেকে প্রায়ই মারধর করে। দীর্ঘদিন দুজনের মধ্যে সংসারে বনিবনা না থাকায় এক পর্যায়ে আমার ছেলে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। বউটা শুধু টাকা চিনে, টাকা হলে তিনি সব কিছু করতে পারে। এই নিয়ে এলাকায় একাধিকবার চেয়ারম্যান মেম্বার বিচার সালিশ করেছে। সবশেষ তাদের মধ্য তালাক হয়েছে। এরপর রংপুরে গিয়ে বাসা ভাড়া নেয় লাইলি। সেখানে একাধিক ছেলে বন্ধুর সঙ্গে তার পরিচয় হয় এক পর্যায়ে ২০১৩ সালে তৎকালীন নাগেস্বরী উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ইকরচালী হাজীপুর গ্রামের মজিবরের পুত্র আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সহকারী শিক্ষাকর্মকার্তার স্ত্রী বিষয়টি জানতে পারলে লাইলিকে সতর্ক করেন। কিন্তু লাইলি বেগম নাছোড়বান্দা। তিনি সহকারী কর্মকর্তার স্ত্রীকে পাত্তা না দিয়ে একাধিকবার তার সঙ্গে অভিসারে লিপ্ত হয়। সেখান থেকে সরে আসার জন্য পরিবার থেকে সহকারী কর্মকর্তাকে চাপ প্রয়োগ করলে এক পর্যায়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় সেই শিক্ষাকর্মকর্তা। পরবর্তীতে সুমনা খাতুন (লাইলি) নাগেস্বরী থানায় একটি মামলা করলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন।

এরপর তিনি ঢাকায় গিয়ে ইমতিয়াজ নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে সংসার শুরু করে এবং সেই সংসারে এক সন্তান রয়েছে। বিয়ে করে প্রতারণার কৌশল পাল্টে তিনি ঢাকায় বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ছবি তোলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে ছবি পোস্ট করে। গ্রামের হামিদ হাজির ছেলে টিটুকে পুলিশে চাকরি দেয়ার কথা বলে ১৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়া তার প্রতারণার শিকার হয়েছে ইকরচালী ইউনিয়নের ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীনের কাছ থেকে তার জামাইয়ের পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকরির দেয়ার কথা বলে ১০ লাখ হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তিনি সুমনা আক্তার লাইলি তার স্বাক্ষরিত দুইটি চেক জয়নালকে প্রদান করেন। যার নম্বর এস বি বি ৮৪০১৭১৮ অপরটি হলো ৮৪০১৭১৭ জনতা ব্যাংক লিমিটেড মৌচাক শাখা। এ নিয়ে জয়নাল আবেদীন গত ২৬ জুন রংপুরে সুমি কমিনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ বিষয়ে লিলির সঙ্গে কথা হলে তিনি টাকা নেয়ার কথাটি স্বীকার করে বলেন ১০ লাখ টাকা নয়, আমি তার কাছ সাড়ে ৫ লাখ টাকা নিয়েছি। ইতিমধ্যে তাকে এক লাখ টাকা ফেরত দিয়েছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত