শাস্ত্রীয় সংগীত এবং নৃত্য অতি প্রাচীন শিল্প এবং এর পেছনে রয়েছে তিন হাজার বছরের পুরোনো ঐতিহ্য যা বর্তমান সময়ে প্রচলিত সব ধরনের সংগীত এবং নৃত্যের অন্যতম ভিত্তি। প্রাচীন পণ্ডিতরা নান্দনিক উপভোগের জন্য শারীরিক উদ্দীপকগুলো যত্ন সহকারে অধ্যয়ন করে আবেগের প্রকৃতি এবং ভাব বিশ্লেষণ করে গেছেন; বিশ্লেষণ করেছেন এই ধরনের আবেগের দৃশ্যমান লক্ষণ এবং প্রতিক্রিয়া; এমনকি অবচেতন মনের প্রকৃতি, অনৈচ্ছিক আবেগ (সাত্ত্বিকভাব)। তারা শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্যের মাধ্যমে প্রকাশ ঘটান এ আবেগের। শাস্ত্রীয় সংগীত এবং নৃত্য কেবল ব্যাকরণ নয়, এটি একটি বিস্তৃত পরিপূর্ণ শিল্প মাধ্যম যা যৌন্দর্য এবং শক্তির সূক্ষ্ম প্রকাশ ঘটায়। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং নৃত্য এক প্রকার ধ্যান এবং প্রার্থনা যা আমাদের মনকে শান্ত রাখে। রাগ ও তাল শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং নৃত্যের ভিত্তি। কঠোর অধ্যবসায় এবং সাধনার মাধ্যমে একজন শিল্পী নিজেকে শাস্ত্রীয় সংগীত এবং নৃত্য পরিবেশনার উপযোগী করে গড়ে তোলেন। শাস্ত্রীয় সংগীত এবং নৃত্যের প্রসার, প্রচার ও নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের শাস্ত্রীয় সংগীত এবং নৃত্যের চর্চায় আরো উৎসাহী করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে সংগীত, নৃত্য এবং আবৃত্তি বিভাগের ব্যবস্থাপনায় ১৪-১৫ জুলাই, ২০২৩ দুই দিনব্যাপী শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসবের করা হয়েছে। গত শুক্রবার বিকাল ৫.৩০টায় জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসব ২০২৩’ প্রথম দিনের আয়োজনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক জনাব লিয়াকত আলী লাকী। প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। দুই দিনব্যাপী এ উৎসবে দেশবরেণ্য বিশিষ্ট শাস্ত্রীয় সংগীত এবং নৃত্যশিল্পীরা অংশগ্রহণ করেছেন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে মহাপরিচালক বলেন- প্রতিমাসে একবার করে শাস্ত্রীয় সংগীত, নৃত্যের আয়োজন করা হবে। দেশের প্রতিটি জেলায় এ ধরনের কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে নানামুখী কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। আমরা প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে ১০০০ শির্ক্ষাথী তৈরীর লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছি। কোনো কোনো জেলায় তা ৩ হাজার ছাড়িয়েছে। সুতরাং আমাদের কার্যক্রম অব্যাহতভাবেই আমরা এগিয়ে নিচ্ছি। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ৫০ বছর পূর্তিতে আরো বড় পরিসরে শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসবের ঘোষণা দেন মহাপরিচালক।