তিন দফা দাবিতে আগামী ১ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জ্বালানি তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে রংপুর বিভাগের পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্টিবিউটরস, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল সোমবার দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সোহরাব টিটু। তাদের দাবি তিনটি হলো- ১. জ্বালানি তেল পরিবহনকারী ট্যাঙ্ক লরির ইকনোমিক লাইফ ৫০ বছর করতে হবে ২. জ্বালানি তেল (ডিজেল, পেট্রোল/অকটেন) বিক্রয়ের উপর প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে ৭.৫ শতাংশ করতে হবে ৩. জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট বিধায় প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা সোহরাব টিটু বলেন, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা হরতাল, অবরোধ, জরুরি অবস্থা, অসহযোগ আন্দোলন ও বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশ উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্যাঙ্কলরির মাধ্যমে তেল পরিবহন করে নিরবচ্ছিন্নভাবে তেল সরবরাহের মাধ্যমে যোগাযোগ ও কৃষি উৎপাদনে দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। এছাড়া করোনাকালীন সময়ে সবকিছু বন্ধ হয়ে গেলে জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে নিরবচ্ছিন্নভাবে তেল সরবরাহ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখায় খাদ্য উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছিল। তিনি আরো বলেন, একমাত্র জ্বালানি তেল ক্রয় এবং বিক্রয় সরকার নির্ধারিত অভিন্ন মূল্যে হয়ে থাকে। জ্বালানি তেল বিক্রয়ের উপর সরকার নির্ধারিত হারে কমিশন প্রদান করে থাকে। ফলে ফিলিং স্টেশনের আয় বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। জ্বালানি ব্যবসায়ীরা সরকারি নির্ধারিত মূল্যে জ্বালানি তেল ক্রয়পূর্বক সরকারি নির্ধারিত মূল্যে বিক্রয় করে স্বল্প কমিশন পেয়ে থাকে। তাই জ্বালানি তেল বিপণন কাজে নিয়োজিতদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানকল্পে গেজেটের মাধ্যমে জ্বালানি ব্যবসায়ীদের অবস্থান/মর্যাদা কমিশন এজেন্ট ঘোষণার জোর দাবি জানাচ্ছি। এ ক্ষেত্রে দ্বৈত লাইসেন্সসহ বিভিন্ন আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতা এড়ানো সম্ভব। এটা হলে সরকারি বিভিন্ন দপ্তর কর্তৃক ফিলিং স্টেশন সংক্রান্ত এসআরও এককভাব জারির প্রবণতা হ্রাস পাবে। এ সংক্রান্ত যাবতীয় দায়িত্ব বিপিসি বা জ্বালানি কোম্পানি বহন করবে। মোস্তফা সোহরাব টিটু বলেন, জ্বালানি তেল বিক্রয়ের উপর ডিলার্স কমিশন বৃদ্ধির দাবি জ্বালানি ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি। জ্বালানি তেলের মূল্য যখন ৬০ টাকা ছিল তখন যে হারে কমিশন প্রদান করা হতো এখন তেলের মূল্য দ্বিগুণ হওয়ার পরও প্রায় একই হারে কমিশন প্রদান করছে। অথচ তেল ক্রয়ে ডিলার/এজেন্টেদের দ্বিগুণ বিনিয়োগ করতে হচ্ছে, একইসঙ্গে জিনিসপত্রের মূল্য ঊর্ধ্বগতির ফলে কর্মচারীর বেতন অনেকাংশে বৃদ্ধি করতে হয়েছে। সব লাইসেন্স ফি প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছে, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিসহ ট্যাঙ্ক লকরির পার্টসের মূল্যও দ্বিগুণ হয়েছে। তিনি আরো বলেন, যেখানে অটোগ্যাস স্টেশন (এলপিজি) প্রতি লিটার ৪৬.৫০ টাকা করে বিক্রয় করে আট টাকা কমিশন পাচ্ছে, সেখানে প্রতি লিটার অকটেন ১৩০ টাকা, পেট্রোল ১২৫ টাকা ও ডিজেল ১০৯ টাকা বিক্রয় করে আমাদের কমিশন দেওয়া হচ্ছে চার টাকা আর ৪৬.৫০ টাকা এক লিটার এলপিজি বিক্রয়ে ১৭ শতাংশ কমিশন দেওয়া হয়। অন্যদিকে প্রতি লিটার অকটেন ১৩০ টাকা, পেট্রোল ১২৫ টাকা ও ডিজেল ১০৯ টাকা বিক্রয়ে ৩ শতাংশ কমিশন দেওয়া হয় এবং যা দীর্ঘদিন ধরে একই জায়গায় অবস্থান করছে।