খুলনায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি হালনাগাদে তাগিদ

প্রকাশ : ২০ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  খুলনা ব্যুরো

খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল দিনে দিনে দীর্ঘ হচ্ছে। অনুমোদন ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অদক্ষ ও অপেশাদার চালক দ্বারা গাড়ি চালানো, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক ব্যবস্থা, ট্রাফিক বিভাগের অদূরদর্শিতা এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের দুর্নীতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ। খুলনায় ৩৫টি গাড়ির ফিটনেস হালনাগাদ করা হয়নি এখনো। তাদের হালনাগাদ করার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, খুলনা বিআরটিএ থেকে এ যাবত ৩০৫০টি গাড়ি নিবন্ধন হয়েছে। এরমধ্যে থ্রি হুইলার ২৬০০ ও বাস মিনিবাস ৪৫০। এগুলোর মধ্যে ফিটনেস হালনাগাদ নাই ৩৫টি। ফিটনেস করার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। হাইড্রলিক হর্নের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট চলমান রয়েছে।

নিরাপদ সড়ক চাই-নিসচা খুলনা জেলা সভাপতি এসএম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বলেন, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় দিন দিন এটি বৃদ্ধি পাচ্ছে। খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটসহ এ অঞ্চলের মোট গাড়ির তিন ভাগের দুই ভাগের রেজিস্ট্রেশন নেই। তাছাড়া চালকের লাইসেন্স নেই অর্ধেকেরও বেশি। বিআরটিএ ও ট্রাফিক বিভাগের মধ্যে সমম্বয় না থাকার কারণে সড়ক দুর্ঘটনার চিত্র এমন অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। সরকারের উচিত বিষয়টিতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া এবং কয়েকটি ঘটনার কারণ খুঁজে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। সড়ক দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা মিঠু বলেন, মহাসড়কে ইজিবাইক, নসিমন, করিমন, আলমসাধু, থ্রি-হুইলারসহ নানাগতির যানবাহন চলাচল করে। ফলে রাস্তায় বাস, ট্রাক বা অন্য দ্রুতগতির যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। শ্রমিক সংগঠনগুলো এর প্রতিবাদে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। ছোট যানবাহনের জন্য আলাদা লেন তৈরির দাবি কখনো পূরণ হয়নি। ফলে দুর্ঘটনা লেগেই আছে। হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে মহাসড়কে এইসব যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধের। কিন্তু সে নির্দেশনাও পালন হচ্ছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মহানগরীতে অনুমোদনহীন গাড়ি চলতে দেওয়া হয় না। ফিটনেস ও অদক্ষ চালকদের সম্পর্কে বিআরটিএ দেখছে। কীভাবে ফিটনেসবিহীন গাড়ির ও অদক্ষ চালক সার্টিফিকেট পায় তা দেখা দরকার। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) খুলনার সহকারী পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার তানভির আহমেদ বলেন, গত এক বছরে খুলনায় ১৭৩টি অভিযানে ৩৬৭টি মামলা দায়ের ও ২ লাখ ৭১ হাজার ৩৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। রেজিস্ট্রেশনবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আমরা গাড়ি ও তার চালকের সঠিক মান যাচাই-বাছাই করে তবেই গাড়িকে চলাচলের অনুমতি দিয়ে থাকি। গত ৯ জুলাই তিনি জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বলেছিলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু বা নবায়নের ক্ষেত্রে ডোপটেস্টের রিপোর্ট দেখে লাইসেন্স প্রদান করা হচ্ছে। বিআরটিএ’র নিয়ম অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ছবি ও হাতের আঙুলের ছাপ গ্রহণ শেষে ইস্যু করা বারকোড সম্বলিত কাগজে প্রিন্ট করা লাইসেন্স থাকলে বৈধভাবে মোটরযান চালানো যাবে।

খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, সড়ক মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধে বিআরটিএ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। পাশাপশি রুট পারমিটসহ অন্যান্য দিক দেখাশোনার জন্য জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে একটি কমিটি রয়েছে। ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ এবং চালকের লাইসেন্স না থাকা বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।