সবুজ ও পরিচ্ছন্ন নগরীখ্যাত রাজশাহীতে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। প্রতিদিন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। ইতোমধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এরই মধ্যে নগরীর পাঁচ ওয়ার্ডের ৭৫টি স্থানের লার্ভা সংগ্রহ করে ২৮টিতে মিলেছে এডিস মশার লার্ভা। তবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কার্যকর ব্যবস্থা ও উদ্যোগ না থাকায় ঝুঁকি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন নগরীর বাসিন্দারা। নগরবাসী বলছেন, আষাঢ়ের বৃষ্টির পরপরই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকে। পরিত্যক্ত জায়গায় জমে থাকা পানিতে মশার উপদ্রব বেড়েছে। কিন্তু সেই পরিত্যক্ত জায়গায় পানি জমতে না দেওয়া কিংবা মশার প্রজনন ক্ষেত্র যেন তৈরি না হয়; সেদিকে লক্ষ্য রাখছে না সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা। নগরীর কয়েকটি স্থাপনা ঘুরে দেখা গেছে, ব্যক্তিগত স্থাপনার চেয়ে সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থাপনা এবং পরিত্যক্ত জায়গা মশা প্রজননের ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও আশপাশের কয়েকটি ভবন। যেখানে মশার প্রজনন ক্ষেত্র আছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কিটতত্ত্ব বিভাগের জরিপের তথ্য অনুযায়ী, নগরীর ৩৮ শতাংশ পানিতে এডিস মশার লার্ভা পেয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এর মধ্যে ক্ষতিকর এডিস মশা আছে ১৩ শতাংশ। ব্রুটো ইনডেক্স (এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপের সূচক) রয়েছে ৪৬ শতাংশের ওপরে। এডিস মশার লার্ভা অনুসন্ধানে নগরীর ১৫টি এলাকার ৭৫টি বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছিল স্বাস্থ্য বিভাগ। এর মধ্যে ২৮টিতেই এডিসের লার্ভা মিলেছে। স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দল সাত দিন ধরে এ নমুনা সংগ্রহ করে। পরে পরীক্ষায় লার্ভা পাওয়া যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, ব্রুটো ইনডেক্সের পরিমাণ ২০ শতাংশের বেশি হলে সে অঞ্চলকে ডেঙ্গু ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়। আর রাজশাহী নগরীতে ব্রুটো ইনডেক্সের পরিমাণ ৪৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। সে হিসেবে ‘অধিকতর ঝুঁকির’ মধ্যে রয়েছে এই নগরী। সম্প্রতি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালের ভেতরে ঝোপঝাড় পরিষ্কারের কাজ চলছে।