চাকরিজীবীদের জন্য ঘোষিত ৫ শতাংশ প্রণোদনা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সরকারি কর্মচারীরা। তারা অভিযোগ করেন, এ প্রণোদনা ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য আরো বাড়াবে। তাই প্রণোদনা না দিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী পর্যায়ে গ্রেড সংখ্যা কমিয়ে বেতন বৈষম্যমুক্ত নতুন পে-স্কেল দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তুলেন ধরেন বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ নামে একটি সংগঠন। সংগঠনটি মহার্ঘ্য ভাতা, গ্রেড বৈষম্য কমানো, নতুন পে-স্কেলসহ বিভিন্ন দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মুখ্য সমন্বয়ক মো. ওয়ারেছ আলী বলেন, ঐক্য পরিষদের ৯ম পে-স্কেলসহ সাত দফা দাবি বাস্তবায়ন না করে অর্থ মন্ত্রণালয় ৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা দেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছে, তা বর্তমান বাজার ব্যবস্থার ও মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এতে প্রজাতন্ত্রের ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীরা চরমভাবে হতাশ ও ক্ষুব্ধ। আমাদের মূল দাবি কর্মচারীদের বৈষম্য দূর করা। কিন্তু তা না হয়ে ৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধায় ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের বৈষম্য আরো বাড়বে। ১১-২০ গ্রেডের অধিকাংশ কর্মচারীর মূল বেতন ২০ হাজার টাকার নিচে। তাদের আগামী ৪ থেকে ৫ বছরেও বিশেষ সুবিধায় সর্বনিম্ন বেতন ১ হাজার টাকার বেশি বাড়বে না। অথচ প্রথম থেকে ৯ম গ্রেডের কর্মচারীদের এ সুবিধা চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়বে। আমরা এ ধরনের বিশেষ সুবিধা চাইনি। আমরা চেয়েছি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের মূল বেতন বৃদ্ধি করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে সরকারি কর্মচারীরা বলেন, অষ্টম পে-স্কেলে প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি পায়। এ পে-স্কেলে বলা ছিল, মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে বেতন-ভাতা সমন্বয় করে বৃদ্ধি করা হবে। কিন্তু গত ৮ বছরে বাজারে পণ্যের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেলেও বেতন বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশের ঘরেই রয়েছে। ২০১৫ সালে ৫ শতাংশের মুদ্রাস্ফীতি এখন ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। এরপরও ৫ শতাংশ হারেই বেতন বৃদ্ধি হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঐক্য পরিষদের নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরামের সভাপতি মো. নুরে রহমান, বাংলাদেশ ১৭-২০ গ্রেড কর্মচারী সমিতির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন হাওলাদার, বাংলাদেশ সরকারী কর্মচারী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি জিয়াউল হক, বাংলাদেশ তৃতীয় শ্রেণি সরকারি কর্মচারী সমিতির সমন্বয়ক মো. ছালজার রহমানসহ কেন্দ্রীয় কমিটি নেতারা।