বদলে যাওয়া বাঁশবাড়ি কলোনি মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে

প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

কলোনির দেয়ালগুলো যেন ছবির মতো। বাহারি সবুজ গাছ, ফাঁকে ফাঁকে হরেক রঙের ফুল। দেয়ালের নান্দনিকতার সুরভি ছাড়াচ্ছে পুরো এলাকা। এ যেন অন্য এক ভুবন, অন্যরকম ভালোলাগা। অথচ কয়েকদিন আগেও কলোনির সড়কজুড়ে আবর্জনায় মানুষের চলা ছিল দায়। কিন্তু ছোট্ট একটি উদ্যোগ পাল্টে দিয়েছে কলোনির চিত্র। চিত্রকরের ছবিকেও যেন হার মানায় ময়মনসিংহ নগরীর বাঁশবাড়ি কলোনির দেয়ালগুলো। স্থানীয়দের কাছে বাঁশবাড়ি কলোনি এখন সবুজ কলোনি। ময়মনসিংহ নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের একটি এলাকা বাঁশবাড়ি কলোনি। এ কলোনিতে নিম্ন আয়ের মানুষের বাস। সম্প্রতি কলোনির ভেতরের ভাঙা সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করেছে সিটি করপোরেশন। সংস্কারের পর আবর্জনায় নোংরা হয়ে থাকা নতুন সড়ক ও ড্রেন ঝকঝকে হয়েছে। ঝকঝকে এলাকাটিকে টিকিয়ে রাখতে সড়কের এক হাজার ফুট এলাকাজুড়ে দেয়ালগুলোতে বাগান করার পরিকল্পনা শুরু করেন কয়েকজন বাসিন্দা। অবশ্য কলোনির বাসিন্দা মুরাদ হাসান কানন গত ৩ বছর আগেই তার বাসায় সবুজায়ন শুরু করেন। সড়কঘেঁষা বাগান থেকেই পুরো এলাকাটিকে নান্দনিক করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা শুরু হয়। তারপর কাননের সঙ্গে যুক্ত হন মেহেদী হাসান মুহিত, সাইফুল ইসলাম ও উত্তর সরকার। চারজন মিলে কলোনির বাসিন্দাদের নিয়ে করেন বৈঠক। নিজের এলাকাকে সুন্দর রাখতে, আগামী প্রজন্মকে সুন্দর মানসিকতা নিয়ে বেড়ে উঠতে দেয়ালগুলোতে সবুজায়ন করার পরিকল্পনায় সাধুবাদ জানান বাসিন্দারা। সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ৩ মাস আগের ছোট এই উদ্যোগে এখন ৮০০ ফুট সড়কের দুইপাশ হয়ে উঠেছে নান্দনিক। ঘরের অব্যবহৃত ও ভাঙা ঝুড়ি, বালতি, মগ নানা কিছুকে করা হয় টব। তার দিয়ে সেগুলোকে দেয়ালে আটকানোর ব্যবস্থা করে তাতে লাগানো হয় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। গাছগুলোর কোনোটি পাতায় সৌন্দর্য, কোনোটি সুরভি ছড়াচ্ছে ফুলে। রাতের হাসনাহেনা মোহিত করে পুরো এলাকা। আবর্জনার তীব্র গন্ধ এখন আর নেই। অথচ কয়েকদিন আগেও আবর্জনার গন্ধে যে এলাকায় টেকা দায় ছিল, সে এলাকায় এখন ফুলের সুরভি ছড়ায়।

কলোনির বাসিন্দারা জানান, গাছগুলোকে টিকিয়ে রাখতে ছোট-বড় সবাই খুবই উদ্যোগী। সবাই নিজেদের এলাকার বাগানকে বড় করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। অনেকে এখন ছুটে যান সেখানে উদ্যোগটি দেখতে, ছবি তুলতে। এতে খুশি এলাকার শিশু-কিশোররাও। বেদেনা আক্তার নামের এক স্থানীয় বলেন, আগে রাস্তা ভালো ছিল না। দুই পাশে সবাই ময়লা ফেলত। এখন রাস্তাও সুন্দর হয়েছে এবং দেয়ালগুলোতে গাছ লাগিয়ে সুন্দর করা হয়েছে। এতে কলোনির চেহারাই পাল্টে গেছে। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, এলাকাটির বাসিন্দারা মডেল হিসেবে নিয়ে দেয়ালগুলোকে বাগানে রূপ দিয়েছেন। এটি শিক্ষণীয় ও অনুকরণীয়। ইচ্ছা থাকলেই চারপাশের পরিবেশ সুন্দর রাখা সম্ভব। আমরা আশা করব নগরীর বাসিন্দারা তাদের বাসা বা এলাকাকে সবুজ ও ফুল দিয়ে সাজিয়ে তুলবেন। তাতে সুন্দর ও পরিবেশবান্ধব নগর গড়ে তোলা সম্ভব।