পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে জাতীয় নীতিমালা কার্যকরের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। গতকাল সোমবার জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব পানিতে ডুবা প্রতিরোধ দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে ‘পানিতে ডুবে যাওয়া প্রতিরোধ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা’ বিষয়ক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) আয়োজনে সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের লাইন ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. আবুল ফয়েজ, ইউনিসেফ বাংলাদেশের চাইল্ড প্রোটেকশন প্রধান প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বলেন, বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ পানিতে ডুবে যাওয়া। এ মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব, যা আমাদের দেশের গবেষকরাই গবেষণা করে বের করেছেন। এখন জাতীয় পর্যায়ে এ পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করার সময় এসেছে। পানিতে ডুবে মৃত্যু রোধে একটি জাতীয় পর্যায়ের কর্মপন্থা (ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি) তৈরির দ্বারপ্রান্তে রয়েছি আমরা, যা বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার উদ্যোগ নিতে কাজ করব। সেমিনারের স্বাগত বক্তব্যে সিআইপিআরবি’র এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর প্রফেসর ড. একে এম ফজলুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে ২০০৫ সাল থেকে কাজ করছে সিআইপিআরবি। এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য, (১) পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে একটি কাজ করব, (২) একটি কাজের উন্নয়ন করব এবং (৩) একটি কাজের সঙ্গে যুক্ত হবো। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিআইপিআরবি ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর ড. আমিনুর রহমান। বাংলাদেশের পানিতে ডুবে মৃত্যুর পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৫০ জন মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়। এরই মধ্যে ৪০ জনই শিশু। এ প্রতিটি জীবনই অপার সম্ভাবনাময় এবং এ অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু প্রতিরোধযোগ্য। এ মৃত্যু প্রতিরোধের গুরুত্ব বিবেচনা করে, ২৫ জুলাইকে বিশ্ব পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ দিবস হিসাবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ। এরই ধারাবাহিকতায় এ বছরের ২৯ মে, ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলি প্রথমবারের মতো পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধকে রেজ্যুলেশন হিসেবে গ্রহণ করেছে। পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান অন্যান্য অতিথিরা। বক্তারা বলেন, অনেক সময় এই মৃত্যুকে দুর্ঘটনা বলে নথিভুক্ত করা হয়। যার ফলে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা দৃষ্টিগোচর হয় না। এজন্য পানিতে ডুবে মৃত্যুকে আলাদাভাবে বিবেচনা করার গুরুত্বারোপ করা হয়। এছাড়াও, পানিতে ডুবে যাওয়া ব্যক্তিকে উদ্ধারের পর সবার আগে গুরুত্বপূর্ণ তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া।