জমিতেই শুকিয়ে যাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন

প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রাজশাহী ব্যুরো

রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত হয়েছে, তবে পর্যাপ্ত নয়। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাবে খাল বা জলাশয়ে নেই পানি। ফলে কৃষকের কাটা পাট জমিতেই শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে অর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছেন পাটচাষিরা।

চলতি বর্ষাকালের পুরো আষাঢ় মাসজুড়ে ২০ দিন বৃষ্টিপাত হয়েছে। দিনের হিসেবে ঠিক থাকলেও পরিমাণের হিসেবে অপ্রতুল। এই মাসজুড়ে মাত্র একদিন ভারি বর্ষণ হয়েছে। গতকাল সরেজমিন পবার কয়েকটি ফসলি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, অনেকেই জমির পাট কাটেননি পানির অভাবে। যারা কেটেছেন তাদের পাট জাঁক দেওয়ার অভাবে জমিতেই পড়ে আছে।

জাঁক দেওয়ার পানির অভাবে জমি থেকে পাট তুলতে পারছেন না তারা। ফলে জমিতেই পড়ে পড়ে শুকাচ্ছে পাট। এমন অবস্থায় অনেক চাষি পাট কাটছেন না। পাটচাষিরা বলছে, খাল, খাড়িতে পানি না জমলে পাট জাঁক দেওয়া যাবে না। এখন পাট কাটলে রোদে শুকিয়ে যাবে। শুকিয়ে গেলে পাটের আঁশ ছাড়ানো যাবে না। এতে করে তাদের লোকসান হবে। তাই অনেকেই পাট কাটছেন না। কেউ কেউ পাট কেটে জাঁক দিয়েছেন। তবে সেই সংখ্যা হাতে গোনা। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহীতে পাট কাটা শুরু হয়েছে। এ বছর রাজশাহী জেলায় ১৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ৪৪২ হেক্টর বেশি জমিতে এই পাটের চাষ হয়েছে।

তবে পানির অভাবে ঠিকঠাক জাঁক দিতে না পারায় কি পরিমাণের পাট কৃষক কেটেছে তা জানা যায়নি। তবে কয়েক দিনের মধ্যে সেই তথ্য উপজেলা পর্যায় থেকে জানা যাবে। আয়ুব আলী নামের একজন পাটচাষি বলেন, পাট কাটার পরে পানির অভাবে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। পাট জাঁক দেওয়ার মতো পানি নেই। পাট জাঁক দেওয়ার ব্যবস্থা করে নিয়ে যাওয়া হবে। এই বিলে যত কাটা পাট পড়ে আছে, তার সবই পানির অভাবে। পাশের বারনাই নদী সেটাতেও পানি নেই। অনেকেই পানির অভাবে পাট কটেনি। আমরা যেখানে (ভোলাবাড়ি বিল) দাঁড়িয়ে আছি বর্ষার এই সময় এই জায়গা পানিতে তলিয়ে থাকে। কিন্তু এবছর পানির অভাবে এই জমিগুলোতে ধানের চাষ করতে পারছে না কৃষক। যারা ধান চাষ করছেন তাদের দুই-তিন দিন পরপর সেচ দিতে হচ্ছে। পবার ভোলাবাড়ি এলাকায় জমিতে পাট কাটছেন ইসরাফিল ইসলামসহ কয়েকজন। ইসরাফিল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, খরার কারণে আর পানির অভাবে আমরা পাট জাঁক দিতে পারছি না। বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে পাট চিকন (পাতলা) হয়ে গেছে।

এছাড়া ফলনও কম হয়েছে। পানি না থাকায় তারা ভোগান্তিতে পড়ছেন পাট নিয়ে। তিনি আরো বলেন, এই জমিতে পাট কাটার পরে ধান লাগানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু পাট কাটতেই দেরি হয়ে গেল পানির অভাবে। এছাড়া কৃষকরা তো ভয় পাচ্ছে। খরার কারণে আবাদ করতে চাচ্ছে না। সার, পানির দাম বেশি। ধান লাগানোর পরে পানির সেচ না দিলে ধান মরে যাবে। এই দিকে গভীর নলকূপও নেই। সাবমার্সিবল পানির পাম্প দিয়ে জমিতে সেচ দেওয়া হয়। এতে প্রতিঘণ্টা ২০০ টাকা দিতে হয়। রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষ লতিফা হেলেন বলেন, তাপমাত্রা আরো বাড়তে পরে। আজ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই।