জিপিএ-৫ পাওয়ার কথা জানা হলো না মামুনের
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
রংপুর বুরো
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার ফলাফল দিয়েছে গতকাল শুক্রবার। এ পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পেয়েছে রংপুর জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন। এ খবর জানার আগেই মারা যায় সে। গত বৃহস্পতিবার বিকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রক্তশূন্যতা রোগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মামুন। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় রংপুর জেলার তারাগঞ্জ উপজেলার ডাংগিরহাট বামন দিঘি নিজ গ্রামে খিয়ারদিঘি কবরস্থানে দাফন কার্য সম্পন্ন করা হয়। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর জিলা স্কুলের সহকারী শিক্ষক আল ইমরান। তিনি জানান, আব্দুল্লাহ আল মামুন রংপুর জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী। মেধাবী শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন জিলা স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল। মেধাবী মামুনের বাড়ি রংপুর জেলার তারাগঞ্জ উপজেলার ডাংগিরহাট বামন দিঘি এলাকায়। তার বাবা মোস্তফা জামান মা আরজিনা বেগম। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে বড়। ছোট ভাই আব্দুল্লাহ আল মুনতাসীর জিলা স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। এদিকে আব্দুল্লাহ আল মামুনের মৃত্যুর খবরে গোটা জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। পরীক্ষার রেজাল্টের দিনে আনন্দ নেই জিলা স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কর্মচারীদের মাঝে। কেননা গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার সময় তাকে কবরে সমহিত করা হয়েছে। আব্দুল্লাহ আল মামুনের বন্ধু ইয়াসির আরাফাত জানান, ছেলে হিসেবে অনেক ভালো ছেলে ছিল। সে খুব বন্ধুপ্রিয় ছিল। আমরা তাকে হারিয়ে সত্যি খুব কষ্ট পেয়েছি। জিলা স্কুলের শিক্ষক আল ইমরান জানান, ছেলেটি খুবই মেধাবী ছিল। খুবই মিশুক ছিল। বন্ধুদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল তার। এবারে ভালো ফলাফল করেছে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। সে রেজাল্ট জানতে পেল না। রংপুর জিলা স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক সাহিনা সুলতানা জানান, আমরা শোকাহত। আমরা একজন মেধাবী শিক্ষার্থীকে হারালাম। আমরা শিক্ষক হিসেবে অভিভাবক হিসেবে খুবই শোকাহত। মামুন তৃতীয় শ্রেণি থেকে আমাদের স্কুলে পড়ে। ছেলেটা চোখের সামনেই বেড়ে উঠল, মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরুনোর দিনে আজ আর আমাদের মাঝে নেই। অথচ চোখের সামনেই যেন বারবার ভেসে উঠছে মামুনের চেহারা। দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে জান্নাত দান করেন। আব্দুল্লাহ আল মামুনের পিতা স্কুলশিক্ষক মোস্তফা জামান বলেন, বাবাটা রেজাল্ট দেখে যেতে পারল না, তার আগেই আমাদের শোকের সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে চলে গেল। আমার বাবাটা খুবই মেধাবী ছিল। ও গত মাসের ২৫ তারিখে অসুস্থ হলে রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। অনেক পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষে রোগ ধরা পড়ে। তার শরীরে হিমোগ্লোবিন কম। রক্ত তৈরি হয় না। তাছাড়া আর কোনো রোগ ছিল না তার। আমরা আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়ার আগেই চলে গেল সে। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।