৩০০ কেজি মাংস মিলবে দুই বছরের গরুতে
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
কৃত্রিম প্রজননে দেশি গরু পালনের মাধ্যমে দুই বছরে ১২০ থেকে ১৫০ কেজি মাংস আহরণ করা সম্ভব বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সেমিনারে ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন এ কথা বলেন। সংগঠনটি জানায়, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এখানকার গ্রামীণ অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি গরু-ছাগল, হাঁস, মুরগি, ভেড়াসহ অন্যান্য গৃহপালিত প্রাণী। গ্রামীণ অর্থনীতির এই চালিকাশক্তিকে শক্তিশালী করার জন্য সংশ্লিষ্ট এই খাতের কিছু টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার। এসময় লিখিত বক্তব্যে ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর দেশীয় জাতের গরু কৃত্রিম প্রজননের জন্য চার ধরনের সিমেন প্রস্তুত করেছে। আরসিসি-নর্থ বেঙ্গল গ্রে-শাহীওয়াল মুন্সীগঞ্জের এসব জাতের একটা গরু থেকে দুধ উৎপাদন করা সম্ভব নয়। শুধুমাত্র মাংসের উৎপাদনের কাজে ব্যবহার হওয়া এই জাতের একটা ২ বছরের গরু থেকে ১২০ থেকে ১৫০ কেজিতে মাংস আহরণ করা সম্ভব।’ ইমরান হোসেন বলেন, দেশীয় গরুর সঙ্গে এসব জাত সংস্কারন না করে আমরা যদি ভ্রাম্যমাণ-এর মতো উন্নত জাতের সংস্কারয়ন করি, তাহলে সমপরিমাণ শ্রম ও ব্যয়ের পরিবর্তে আমরা ২ বছরের একটা গরু থেকে ২৫০ থেকে ৩০০ কেজি মাংস আহরণ করতে পারব। এই একটামাত্র পদক্ষেপেই মাংসের উৎপাদন খরচের অনেকাংশ কমানো সম্ভব, যা সরাসরি মাংসের মূল্য হ্রাসে সাহায্য করবে। ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের এই মুখপাত্র বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই দানাদার খাদ্যসহ অন্যান্য জিনিসের মূল্য অনেক বেশি। সুতরাং গরুকে এই উচ্চমূল্যের দানাদার খাবারের পরিবর্তে উচ্চ প্রোটিনযুক্ত ও উচ্চ ফলনশীল সমৃদ্ধ ঘাস খাওয়াতে হবে। চাষিদের জন্য মাঠপর্যায়ে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সব প্রান্তেই নানারকম ফসলের চাষ হয়। এসব ফসলের উচ্ছিষ্টাংশ যেমন ধানের খড়, ভুট্টা গাছের কাণ্ড, বিভিন্ন ডালের গাছ, কলাগাছসহ অন্যান্য সব ধরনের ফসলের বাইপ্রোডাক্ট প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে খুব উচ্চমানের গো-খাদ্য তৈরি সম্ভব। দানাদার খাদ্যের পরিবর্তে চাষিরা কীভাবে এই খাবার খুব সামান্য মূল্যে প্রস্তুত করতে পারে, সেই ব্যাপারে মাঠপর্যায়ে বিস্তর ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। টেকনিক্যাল ট্রেনিংয়ের কথা উল্লেখ করেন, ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন বলেন, বাংলাদেশে পশু ডাক্তারের স্বল্পতা রয়েছে, যে কারণে খামারিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার মতো দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্যও টেকনিক্যাল ট্রেনিং দরকার।