সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত পাসের দাবি
প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
তামাক ব্যবহারজনিত কারণে দেশে প্রতিদিন গড়ে ৪৪২ জন মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। এই মৃত্যু রোধ করতে হলে এবং প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া অতি দ্রুত পাস করার দাবি জানিয়েছে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন। সংস্থাটির নেতৃবৃন্দরা বলেছেন, এই আইনের সংশোধন যত বিলম্ব হবে, তামাকজনিত মৃত্যু ততই বাড়তে থাকবে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনও বাধাগ্রস্ত হবে। গতকাল সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সংস্থাটির তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের সমন্বয়কারী মো. শরিফুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ পাঠকালে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধিত খসড়াতে ধূমপানের নির্ধারিত এলাকা বিলুপ্ত, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ, খুচরা বিড়ি-সিগারেট বিক্রি বন্ধ, ই-সিগারেট নিষিদ্ধ, তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম বন্ধ ছাড়াও সিগারেটের প্যাকেটে সতর্কবার্তা ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আইনটি আরো কঠোর হবে। ফলে তামাকজনিত মৃত্যু কমবে, জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটবে এবং প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত তামাকমুক্ত বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত হবে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ। বক্তব্যকালে তিনি বলেন, দেশের ৩৭ শতাংশ মানুষ ধূমপান করে। এছাড়া তাদের আশপাশে অবস্থান করা প্রায় তিন কোটি মানুষ পরোক্ষভাবে ধূমপানের শিকার হচ্ছে। এই মানুষগুলো জানেনও না যে তারা ধূমপান না করেও ক্ষতির শিকার হচ্ছে। তামাকের পাশাপাশি জর্দা, গুল, সাদাপাতার মতো তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার কমাতেও উদ্যোগ নিতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ই-সিগারেটের ব্যবহার বাড়ছে। যা আরো অধিক ক্ষতিকর। এটি প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজন। এ লক্ষ্যেই আইনটির খসড়া তৈরি করা হয়েছে। আশা করছি, আইনটি দ্রুত পাস হয়ে যাবে। অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ বলেন, সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে মাইলফলক হিসাবে কাজ করবে বলে মনে করি। আইনটি সংসদে যেন দ্রুত পাস হয়, সে বিষয়ে আমরা অবশ্যই উদ্যোগ নেব। আশাকরি সব বাধা অতিক্রম করে আমরা এটি বাস্তবায়ন করতে পারব। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত লক্ষ্য অনুযায়ী আমাদের হাতে এখনো ১৭ বছর রয়েছে। আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে অনেক অসাধ্যকেও সাধন করা সম্ভব। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সংসদ সদস্য শিরীন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে তরুণ সমাজ ই-সিগারেটে আসক্ত হয়ে পড়ছে। ভারতসহ বিশ্বের ৪২টি দেশ এটা নিষিদ্ধ করেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এটা নিষিদ্ধে আইন সংশোধন করেছে জেনে খুশি হয়েছি। ই-সিগারেট ও বিড়ি-সিগারেটের খুচরা বিক্রি নিষিদ্ধকরণ তরুণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ইতিবাচক প্রভাব রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। আইনটি দ্রুত পাস হোক- এটাই আমার চাওয়া। এছাড়া সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, এই আইনটি দ্রুত পাসের মাধ্যমে শক্তিশালী করা গেলে একদিকে অধূমপায়ীরা পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি থেকে সুরক্ষা পাবেন, অন্যদিকে আগামী প্রজন্মের নাগরিকদের তামাকপণ্য ব্যবহারের সম্ভাবনাও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। পক্ষান্তরে তামাকজনিত কারণে প্রতিদিন ৪৪২ জনের মৃত্যু রোধ করা সম্ভবপর হবে।