নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তড়িঘরি করে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে বরিশালের চন্দ্র মোহন রুস্তম মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। ম্যানেজিং কমিটির ছয় সদস্য ও চাকরি প্রত্যাশিরা নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ করে আদালতে মামলা ও ইউএনও বরাবর অভিযোগ করেও স্বচ্ছ নিয়োগের ব্যবস্থা করাতে পারেনি। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সবাইকে ম্যানেজ করে দ্রুত নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেন বলে অভিযোগ পরীক্ষার্থীদের। হিসাব সহকারী পদের প্রার্থী ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ জানান, বরিশাল সদর উপজেলার চন্দ্র মোহন রুস্তম মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী, অফিস সহায়ক অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে এ বছরের মে মাসের ২৫ তারিখ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। তিনি ওই পদে আবেদন করলে তার কাছে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও তার ছেলে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করে। তিনি ঘুষ দিতে অপারগতা প্রকাশ করে জানান তিনি ওই পদের জন্য যোগ্য প্রার্থী। তিনি ঘুষ দিতে পারবেন না। বরং তাকে নিলে প্রতিষ্ঠান উপকৃত হবে। পরে তারা অন্য প্রার্থীর সাথে যোগাযোগ করে টাকা নেন। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য অরুন ঢালী জানান, নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি জানতে পেরে তা ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। এর আগে তারা আদালতে মামলাও করেন। এসব কারণে দুইবার ১৫ ও ২৯ জুলাই পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করেও তা স্থগিত করে। কিন্তু ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সবাইকে ম্যানেজ করে পুনরায় এক দিন পর ৩১ জুলাই ওই পরীক্ষা নেন। তবে ওই পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা খুবই ছিল। এমনকি পরীক্ষায় কমিটির পাঁচজনের মধ্যে একজন মেম্বার থাকার কথা থাকলেও অনিয়মে বিষয়টি জানতে পেরে তিনি নিয়োগ বোর্ডে অনুপস্থিত ছিলেন। আরেক পরীক্ষার্থী জানান, মোটা অঙ্কের ঘুষ নেয়ার অভিযোগে ইউএনও বরাবর গত ১৩ জুলাই অভিযোগ দেন প্রার্থীসহ ম্যানেজিং কমিটির একাংশ। এর আগে সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানি ৩৯৩/২০২৩নং মোকাদ্দামাও দায়ের করা হয়। নিয়োগ বাণিজ্যের খবর ছড়িয়ে পরায় ২৯ জন আবেদনকারির মধ্যে অংশগ্রহণ করে ১৪ জন। তবুও তারা পরীক্ষা নেয় এবং তাদের মনোনীত প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়। এ দিকে তড়িঘড়ি করে পরীক্ষা গ্রহণের কারণ জানিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিথীকা রানি ও ডিজির প্রতিনিধি আরজু মনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনিতা রানি হালদার জানান, বারবার তারিখ দিয়ে তাদের আনা হয় তাই মানবিক কারণে পরীক্ষা নিয়েছি। যদি আবারও আইনি জটিলতা দেখা দেয় তবে ওই প্রতিষ্ঠানের এমপিও বাতিল হবে। তাদের বলা হয়েছে, ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে আসার জন্য কিন্তু তারা তা আনলে এটা তাদের বিষয়। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মকবুল আহম্মেদ জানান, অর্থ গ্রহণের বিষয়টি মিথ্যা এবং অবাস্তব। তিনি ম্যানেজিং কমিটির সবাইকে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু কেউ না এলে তিনি কী করবেন। তিনি জানান, মামলার একটি নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে। সেই বলে তিনি পরীক্ষা নিয়েছেন। অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগটি পরীক্ষা হওয়ায় আগেই দেয়া হয়েছে। তিনি এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। আগামী সাত কর্ম দিসবের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।