ঢাকা ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

খুলনায় নগর পরিবহণ এখন শুধুই স্মৃতি

খুলনায় নগর পরিবহণ এখন শুধুই স্মৃতি

ইজিবাইক, মাহিন্দ্রা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার দাপটে হারিয়ে গেছে খুলনার নগর পরিবহন। স্বল্প ভাড়ার কারণে এক সময় নগরীর রূপসা ফেরিঘাট থেকে ফুলতলার ২০ কিলোমিটার পথ দাপিয়ে বেড়ানো নগর পরিবহন এখন খুলনাবাসীর কাছে শুধুই স্মৃতি। যাত্রী না থাকা, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, শ্রমিকদের পারিশ্রমিক দিতে না পারার কারণে এই সার্ভিসটি বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকরা। খুলনা মোটরবাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে ৬০টি বাস দিয়ে নগরীর রূপসা ফেরিঘাট থেকে ফুলতলা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কে চালু হয় নগর পরিবহন সার্ভিস। এ বাস চালুর পর থেকেই তা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বিশেষ করে ফুলবাড়ি গেট এলাকায় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), দৌলতপুরের বিএল কলেজ, দিবানৈশ কলেজ, বয়রা সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রছাত্রীদের আনা-নেওয়ার মাধ্যমে অর্ধবেলা পার করতেন নগর পরিবহনের চালকরা। সেই সময়ে নগর পরিবহনের সঙ্গে সমানতালে চলেছে বেবিট্যাক্সি। পরিবেশ ধ্বংসকারী এই ছোট বাহনটি পরিবেশবাদীদের দাবির মুখে বন্ধ হয়ে যায় আরো প্রায় এক যুগ আগে। সেই জায়গা দখল করে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ইজিবাইকের সংখ্যা। ভাড়া কম থাকায় স্বল্প দূরত্বের পথ অতিক্রম করতে ইজিবাইককেই বেছে নিতে শুরু করে নগরবাসী। ক্রমাগত কমতে থাকে নগর পরিবহনের যাত্রী। এরইমধ্যে কুয়েটসহ নগরীর কলেজগুলোতে সরকারিভাবে দেওয়া হয় বাস। এতে করে আরো যাত্রী সংকটে পড়ে নগর পরিবহনের বাসগুলো। নগর পরিবহন বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মুজিবুর রহমান বলেন, যাত্রী সংকটে ভুগতে থাকা অবস্থায় আঘাত হানে বৈশ্বিক মহামারি করোনা। এ কারণে যাত্রী সংখ্যা একেবারে কমে যায়। ফলে ২০১৯ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয় নগর পরিবহন। করোনা সংকট কেটে যাওয়ার পর ২০২২ সালের ১ আগস্ট আবারো চারটি বাস দিয়ে চালু করা হয় নগর পরিবহন। এতে ১০ কিলোমিটারের বেশি পথ অতিক্রমকারী যাত্রীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এলেও স্বল্প দূরত্বের যাত্রী সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। অবস্থা এমন হয়ে যায় যে, বাসের জ্বালানি কেনার জন্য বাড়ি থেকে টাকা সংগ্রহ করে দিতে হয়। এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে নগর পরিবহন সার্ভিসটি আবার বন্ধ করে দিতে হয়। তিনি বলেন, রূপসা থেকে ফুলতলা পর্যন্ত সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে ৩০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। এই রুটে নগর পরিবহন চলাচলের জন্য ফুলতলা থেকে দৌলতপুর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য ১০ টাকা এবং সাধারণ যাত্রীদের জন্য ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। নগর পরিবহন বন্ধ করে দিয়ে বাসগুলো আবারো বিভিন্ন রুটে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত