রংপুর জেলায় পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় চতুর্থ পর্যায়ে (দ্বিতীয় ধাপ) ভূমিহীন ও গৃহহীন ৬৭৮ পরিবার পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের পাকা ঘর। একই সঙ্গে তারাগঞ্জ ও কাউনিয়ার পর এবার বদরগঞ্জ হতে যাচ্ছে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত উপজেলা। গতকাল সোমবার বেলা দেড়টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান। জেলা প্রশাসক বলেন, চতুর্থ পর্যায়ে বরাদ্দ ১ হাজার ৩৩৮টি ঘরের মধ্যে প্রথম ধাপে ৭৫৮টি পরিবারকে জমিসহ পাকা ঘর হস্তান্তর করা হয়। বাকি ঘরগুলো নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (৯ আগস্ট) চতুর্থ পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে ৬ উপজেলায় আরো ৬৭৮টি ঘর হস্তান্তর করা হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘর নির্মাণ কাজ ও নির্মাণের মান তদারকি করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, রংপুরের আটটি উপজেলার মধ্যে তারাগঞ্জ ও কাউনিয়া উপজেলাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এরইমধ্যে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছেন। এবার চলমান পুনর্বাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চতুর্থ পর্যায়ে বদরগঞ্জ উপজেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীন ঘোষণা করা হবে। একই সঙ্গে ৬ উপজেলায় মোট ৬৭৮টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের মাঝে ২ শতক জমির মালিকানাসহ গৃহ হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী। ডিসি মোবাশ্বের হাসান বলেন, সদর উপজেলার ৬০টি পরিবার, পীরগঞ্জে ৩৫, পীরগাছায় ৭৫, মিঠাপুকুরে ২৩৩, বদরগঞ্জে ১৫৫ এবং গঙ্গাচড়া উপজেলার ১২০টি পরিবার পাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই। গৃহ হস্তান্তরকালে এসব উপকারভোগীদের মাঝে ২ শতক জমির কবুলিয়ত দলির, নামজারি খতিয়ান, ডিসিআর ও গৃহ হস্তান্তর সনদ প্রদান করা হবে। সরকারের পাশাপাশি গৃহহীনদের ঘর দেওয়ার এই মহতী উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন রাজনীতিবিদ, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিবর্গ। জেলা প্রশাসক বলেন, জেলার হালনাগাদ তালিকা অনুযায়ী ভূমিহীন ও গৃহহীনের সংখ্যা ৫ হাজার ৬৫১ পরিবার। এরইমধ্যে ৪ হাজার ৪৮৬ পরিবারকে দুই কক্ষবিশিষ্ট আধা পাকা ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। মুজিব শতবর্ষে ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ এই স্লোগান নিয়ে শুরু হওয়া প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় যাদের জমি নেই, ঘর নেই তাদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারি খাস জমিতে এসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এ সময় তিনি বলেন, দেশে একজন মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না, এটি প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা। রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকার মধ্যে থাকা ভূমিহীন-গৃহহীনদের পর্যায়ক্রমে এ কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হবে। এছাড়া এরইমধ্যে যেসব উপজেলা ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে, সেসব উপজেলায় যদি নতুন কাউকে পাওয়া যায় তারও ব্যবস্থা করা হবে। এটি সরকারের একটি চলমান কার্যক্রম। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. রেজাউল করিম, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়ান আসিফ পেলে প্রমুখ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম দুলু, রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোনাব্বর হোসেন মনা, সাধারণ সম্পাদক মেরিনা লাভলী, সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, জয়নাল আবেদীন, মাহবুব রহমান হাবু, রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি নজরুল ইসলাম রাজু, প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফরহাদুজ্জামান ফারুক প্রমুখ।