ঢাকা ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বঙ্গমাতা’র ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন

বঙ্গমাতা’র ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন

রাজশাহীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়। এ উপলক্ষ্যে গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘সংগ্রাম-স্বাধীনতা প্রেরণায় বঙ্গমাতা’ শীর্ষক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। সভায় বক্তারা বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে বঙ্গমাতার অবদান তুলে ধরেন। ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, মাত্র ৪৫ বছরের জীবনে বঙ্গমাতা তার নিজের কথা না ভেবে বাংলাদেশের জনগণের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। কীভাবে দেশের মানুষকে ভালো রাখা যায়, মানুষের খোঁজখবর নেয়া যায়- তা তিনি ভাবতেন। বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে ছিলেন, তখন তিনি দেশের সামগ্রিক সংবাদ তাকে জানানো ও তার সিদ্ধান্তগুলো জনগণের কাছে পৌঁছানোর গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন।

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আমরা অনেকেই বঙ্গমাতাকে চোখে দেখিনি, কিন্তু তার ছবি দেখেছি। বঙ্গমাতার সব ছবিতেই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন মানুষের অবয়ব ফুটে ওঠে। তার দূরদৃষ্টির পরিচয় পাওয়া যায় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময়। তিনি কারাগারে বন্দি বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি না নিয়ে জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু হওয়ার পেছনে শেখ ফজিলাতুন নেছার অবদান সব থেকে বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণের আগে বঙ্গবন্ধুকে অনেকেই অনেক পরামর্শ দিয়েছিল। কেউ স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে বলেছিল, কেউ নিষেধ করেছিল। কিন্তু বঙ্গমাতা জনগণের চোখের দিকে তাকানোর পরামর্শ দিয়ে বলেছিলন- ‘জনগণ যা চায় এবং তোমার মন থেকে যে কথা বের হবে, সেটাই তুমি বলবে।’ বঙ্গবন্ধু সেদিন তাই করেছিলন। যে ভাষণ এখন সারা বিশ্বের সেরা কয়েকটি ভাষণের একটি- এর নৈপথ্যে ছিলেন মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা। বিভাগীয় কমিশনার বলেন, বঙ্গমাতা স্বামীর সহযোদ্ধা হিসাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার সন্তানরা বলেছেন- আমার মা একজন গেরিলা যোদ্ধা। আমার বাবার পেছেনের একমাত্র চালিকা শক্তি। এ সময় তিনি বঙ্গমাতার জীবনী থেকে নারীদের শেখার পরামর্শ দেন।

নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. অলীউল আলম অনুষ্ঠানে আলোচক হিসাবে বক্তৃতা করেন। জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনিসুর রহমান, আরএমপির কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে রাজশাহী জেলার ১২৫ জন অসচ্ছল মহিলার হাতে সেলাই মেশিন ও স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতিগুলোর মধ্যে ১৭৯টি সমিতির অনুকূলে ৫৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকার অনুদানের চেক তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৪০ জন অসহায়, অসচ্ছল মহিলাকে ২ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত