হত্যা মামলায় তরুণ বয়সে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল সিলেটের গোলাপগঞ্জের বাসিন্দা মাসুক মিয়ার। ঘটনার পর ৩৩ বছর আত্মগোপনে কাটিয়ে বৃদ্ধ বয়সে এসে গ্রেপ্তার হলেন পুলিশের হাতে। ১৯৯০ সালে পলাতক তরুণ মাসুক মিয়ার বয়স এখন ৫৬ বছর। গতকাল শুক্রবার ভোরে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ আসামির নিজ বাড়ি উপজেলার করগাঁও এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। বোনের মৃত্যুশোকে বোরকা পরে গোপনে কুলখানিতে অংশ নিতে এসে গ্রেপ্তার হলেন পুলিশের হাতে। গ্রেপ্তার হওয়া মাসুক মিয়া (৫৬) সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষনাবন্দ ইউনিয়নের করগাঁওয়ের চরন মিয়ার ছেলে।
পুলিশ সূত্র জানায়, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ১৯৯০ সালের এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে খুন হন সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের করগাঁওয়ের হাছন মিয়ার ছেলে আব্দুস সালাম। ঘটনার রাতে উপজেলার পুরকায়স্থ বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ছুরিকাঘাতে তাকে খুন করা হয়। খুনের ঘটনায় ওই বছরের ১৩ এপ্রিল থানায় মামলা করা হয়। দায়েরকৃত মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন মাসুক মিয়া। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের পর তিনি ভারতে পালিয়ে যান। এরপর ১৯৯২ সালে সিলেটের আদালত থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হন মাসুক মিয়া। দীর্ঘ আত্মগোপনকালে সৌদি আরবেও অবস্থান করেন তিনি। সিলেট জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. সম্রাট তালুকদার জানান, কিছুদিন আগে বোনের কুলখানিতে অংশগ্রহণের জন্য দেশে আসেন। গতকাল ভোরে আসামি বোরকা পরে এলাকায় প্রবেশ করলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ১৯৯০ সালে খুনের ঘটনার পর মাসুক মিয়া পালিয়ে চট্টগ্রামে ৬ মাস থাকার পর আসামে চাচার কাছে চলে যান। সেখান থেকে সৌদি আরব গিয়ে বেশ কিছুদিন থেকে আবার আসামে ফিরে বিয়েও করেন। কিন্তু নিঃসন্তান থাকার কারণে স্ত্রীর সঙ্গে বিয়ে-বিচ্ছেদ হয়। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে আগেও একাধিকার বোরকা পরে তিনি এলাকায় যাতায়াত করেছিলেন। সে খবর আমাদের কাছে ছিল। যে কারণে সোর্স নিয়োগ করি। কিন্তু এবার তা সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি বোনের কুলখানিতে অংশ নিতেই তিনি দেশে এসেছিলেন।