খানাখন্দে ভরা সড়ক হাজারো মানুষের দুর্ভোগ

প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থেকে জাঙ্গালিয়া বাজার পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তাজুড়েই সৃষ্টি হয়েছে ছোটবড় গর্ত। একই সঙ্গে বিভিন্নস্থানে বিটুমিন ও ইট উঠে মাটি বের হয়ে গেছে। আর বৃষ্টি হলে সড়কের গর্তগুলো যেন একেকটা ছোট নর্দমায় পরিণত হয়। সব মিলিয়ে ঝুঁকি নিয়েই সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, আড়াইহাজার থেকে জাঙ্গালিয়া বাজার পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য ১১ কিলোমিটার। আড়াইহাজারের খাগকান্দা, উচিৎপুরা, কালাপাহাড়িয়া ও হাইজাদী ইউনিয়নের যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন এ সড়ক দিয়ে সহজেই ঢাকা যাতায়াত করতে পারে। সে হিসেবে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত করতে হয় এই রাস্তা দিয়ে। সবশেষ ২০০৮ সালে এ সড়কটির সংস্কার করা হয়েছিল। বর্তমানে সড়কটির ১১ কিলোমিটার রাস্তাই চলাচলের অযোগ্য হয় পড়েছে। অথচ এই সড়কটির সংস্কারের জন্য ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত পরিপূর্ণ সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি সড়কটিতে। কিছুদিন রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করার পর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অটোরিকশাচালক কাশেম মিয়া বলেন, পুরো রাস্তাজুড়েই ছোট ও বড় গর্ত। বিভিন্ন স্থানে ইটের আস্তর উঠে মাটি বের হয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলে গর্তগুলোতে পানি জমে কাদার সৃষ্টি হয়। গর্তে গাড়ি আটকে থাকে। তখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। প্রতিদিন অসহনীয় ভোগান্তি নিয়েই আমাদের এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। সিএনজিচালক শফিক বলেন, বর্তমানে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করার খুবই কষ্টকর। বৃষ্টি আসলে গাড়ি বড় বড় গর্তের মধ্যে পড়ে যায়। আবার বৃষ্টি না আসলে কাদা শুকিয়ে ধুলার সৃষ্টি হয়। ধুলার কারণে সড়ক দিয়ে চলাচল করতে কষ্ট হয়। আড়াই হাজারের উচিৎপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইসমাঈল বলেন, এই সড়কটি আমার ইউনিয়নসহ আশপাশের আরও তিনটি ইউনিয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কটির কোনো সংস্কার কাজ করা হয়নি। ফলে মাসের পর মাস এলাকাবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে গত ৩ বছর ধরে এই দুর্ভোগের মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। যানবাহনে চলাচল তো দূরের কথা হেঁটেই চলাচল করাই যেন দায়। এদিকে বর্তমানে সড়কটির সংস্কারের কাজ পেয়েছে রাজধানী ঢাকার মিরপুর পল্লবী ডিওএইচএস এলাকার এমএমআর-ইউএনটি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির ঠিকাদার এসএম জামাল বলেন, সড়কের কাজ চালু হয়েছে। আশা করছি, চলতি বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। তবে আড়াইহাজার উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, আমরা দুইবার উদ্যোগ নিয়েছে সড়কটির সংস্কারের জন্য। একবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডলি কনস্ট্রাকশনকে কাজটি দেওয়া হয়েছে। তারা করতে পারেনি। বর্তমানে এমএমআর-ইউএনটি নামের একটি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। তারাও করতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। তাই এই কাজটি বাতিলের জন্য আমরা চিঠি দিয়েছি। নারায়ণগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন জাগো নিউজকে বলেন, এই সড়কটি সংস্কারের জন্য দুইবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যে কাজটা নেয় কিছুদিন যাওয়ার পর লাভ করতে পারবে না ভেবে কাজটি করে না। আমরা এখন নতুন ঠিকাদার নিযুক্ত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছি। বর্তমান ঠিকাদারকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে, সে কাজ না ধরলে টেন্ডার বাতিল করে নতুন ঠিকাদারকে কাজটি দেওয়া হবে। আশা করি, নতুন ঠিকাদারের মাধ্যমে সড়কটি সংস্কার হবে।