মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পারমিটবিহীন হিউম্যান হলার

প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রাজশাহী ব্যুরো

রাজশাহী জেলা হিউম্যান হলার মালিক সমিতির স্টিকার লাগিয়ে রুট পারমিট, রেজিস্টেশন নম্বার প্লেট, শো-রুমের বৈধ্য কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দাপটের সঙ্গে চলছে হিউম্যান হলার (সিএনজিচালিত ইমা) গাড়ি। বিভিন্নস্থানে মাসিক গোপন চুক্তির মাধ্যমে নির্বিঘ্নে চলাচল করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে বিভিন্ন সময় দুঘর্টনার শিকার হয়ে ঘটছে প্রাণহনি। এসব যানবাহনের বেশিরভাগ ত্রুটিপূর্ণ ও চালকদের অনেকে অপ্রাপ্তবয়স্ক। যা দেখার কেউ নেই।

জানা গেছে, মোটরযান আইন অমান্য করে রাজশাহী নগরীর কোর্ট বাজার থেকে বানেশ্বর বাজার পর্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ হিউম্যান হলার (ইমা) চলাচল করছে। মোটরযান আইনের ১৫১ ধারামতে, যানবাহনের আকার ও রং বা যে কোনো ধরনের পরিবর্তন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ অপরাধে ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা উভয় ধরনের শাস্তির বিধান আছে। আর ১৪৯ ধারা অনুযায়ী ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন চালানো অপরাধ। এ ধারায় অপরাধীকে এক মাসের কারাদণ্ড বা ২৫০ টাকা জরিমানা করা যেতে পারে। নাম না প্রকাশের শর্তে হিউম্যান হলারের মালিক ও চালক জানান, রাজশাহী মহানগরীর মধ্যে কোট বাজার থেকে বানেশ্বর পর্যন্ত প্রায় ৫০টি হিউম্যান হলার (সিএনজি চালিত ইমা) গাড়ি চলাচল করে। এগুলো কোট বাজারে তিনজন মাস্টার রয়েছে তাদের ৩০ টাকা, সাহেব বাজারে তিনজন মাস্টার রয়েছে তাদের ৩০ টাকা, তালাইমাড়ীতে দুইজন মাস্টার রয়েছে তাদের ১০ টাকা, কাটাখালী একজন মাস্টার রয়েছে তাকে ১৫ টাকা, বেলপুকুরিয়া দুইজন মাস্টার রয়েছে তাদের ১০ টাকা, বানেশ্বর তিনজন মাস্টার রয়েছে তাদের ৩০ টাকা দিতে হয় প্রতিদিন। ছয়টি স্থানে ১৪ জন মাস্টার কাজ করে। এতে প্রতিদিন ১২৫ টাকা করে দিতে হয়। এছাড়া সমিতিকে প্রতিমাসে ২০০ টাকা দিতে হয়। আর সমিতির সদস্য হতে গেলে ১৫ হাজার টাকা থেকে শুরু চুক্তির মাধ্যমে ইচ্ছামতো টাকা আদায় করা হয়। হিউম্যান হলার (সিএনজিচালিত ইমা) গাড়ির মালিক নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, রাজশাহী কোর্ট থেকে বানেশ্বর পর্যন্ত প্রতিদিন ২ থেকে ৩টি ট্রিপ হয়। এজন্য ৬টি স্থানে মাস্টারের খরচ বাবদ ১২৫ টাকা দিতে হয়। মালিক সমিতিতে প্রতি মাসে ২০০ টাকা জমা দিতে হয়। এছাড়া হরতাল, নির্বাচন ইত্যাদি কাজে যখন যতটি গাড়ি প্রয়োজন প্রশাসন নেন। এছাড়াও বিভিন্ন থানায় প্রতিদিন ৮ থেকে ১০টি গাড়ি ব্যবহার করে। এতে গাড়ির তেল খরচ বাবদ ৯ লিটার তেল ছাড়া কিছুই দেন না। তাও একটি গাড়ি থানার কাজে ব্যবহার হলে সেই দিন সকাল থেকে পরেরদিন বিকাল পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়। রাজশাহী জেলা হিউম্যান হলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাতেন বাবু জানান, আমরা পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলি। আমরা তাদের গাড়ি দিয়ে অনুরোধ করে হাত ধরে আমরা চলি। রাজশাহীর বিআরটিএ সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) মো. আব্দুল খালেক জানান, হিউম্যান হলার গাড়ির মেট্রোর বাহিরে চলার নিয়ম নেই। আর এই গাড়িগুলোর সব গাড়ির রেজিস্টেশন নেই। তবে কয়েকটি গাড়ির রেজিস্টেশন আছে। ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যানবহন) মো. আনোয়ার হোসেন জানান, আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করি। যাদের কাগজপত্র নেই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আরএমপি ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক মো. সাইদুর রহমান জানান, এই গাড়িগুলো অনেক আগে থেকে চলে। মোবাইলে সব তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়।