বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গত ৮ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে স্বাক্ষরিত প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী তিন বাহিনীর সাধারণ বিষয়সমূহ Annual Defence Dialogue (ADD) এর মাধ্যমে প্রক্রিয়াকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতি বছর ADD ভারত ও বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ পর্যন্ত উভয় দেশের মধ্যে মোট চারটি ADD অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বছর চতুর্থ ADD ভারতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় পঞ্চম ADD ২৮ আগস্ট ২০২৩ তারিখ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে ঢাকায় শুরু হয়েছে।
এই সংলাপে মূলত উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতা, দ্বিপাক্ষিক সামরিক বিষয়সমূহ, সামরিক শিল্প, দুর্যোগ মোকাবিলা ও মুক্তিযুদ্ধ-সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হবে। বাংলাদেশের পক্ষে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং ভারতের পক্ষে ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব শ্রী গিরিধর আরমান, স্ব স্ব প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করছেন।
এর আগে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সাথে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে ভারতের প্রতিনিধিদলের প্রধান সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। উভয় দেশের মধ্যকার TRI SERVICES STAFF TALK (TSST) আজ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বর্তমানে অত্যন্ত নিবিড়। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে প্রতিরক্ষা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণে সহযোগিতা প্রদানের জন্য ভারতের ক্রমাগত সহায়তার বিষয়টি সুস্পষ্ট। প্রতি বছর বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অনেক সদস্য ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। একইভাবে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকেন। দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনী বিভিন্ন পর্যায়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে একসাথে কাজ করে আসছে। এছাড়া উচ্চ পর্যায়ের সামরিক সফর বিনিময় দুই দেশের মধ্যকার সামরিক সহযোগিতার একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ভিত্তি সুদৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছে, যা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তৈরি হয়েছিল। উভয় দেশের এই সম্পর্ক বহুমাত্রিক, বহুমুখী এবং সর্বদা বিকাশমান। এছাড়া রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ সব ক্ষেত্রে এ দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ভারতের সাথে সামরিক ও নিরাপত্তাবিষয়ক সম্পর্কের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এই অগ্রগতি পারস্পরিক সহযোগিতা ও বন্ধুত্বকে একটি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে।