পরকীয়ার জেরে নিজ ছেলেকে হত্যা
দণ্ডপ্রাপ্ত দুই খুনি গ্রেপ্তার
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
চাঁদপুরের হাইমচরে পরকীয়ার জেরে নিজ ছেলেকে হত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত দুইজন আসামিকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের কাঁচপুর ও মুন্সীগঞ্জের মাওয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে নারায়ণগঞ্জস্থ র্যাব-১১ এর একটি টিম। ৩১ আগস্ট মুন্সীগঞ্জের মাওয়া এলাকা থেকে মো. ইউসুফ মোল্লা ও ১ সেপ্টেম্বর কাঁচপুর এলাকা হতে মো. মাহবুব মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত মো. ইউসুফ মোল্লা (৩৬) চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানাধীন রামপুর বাজার ২নং ওয়ার্ড উত্তর বিষকাটালি এলাকার হোসেন মোল্লার পুত্র ও মো. মাহবুব মোল্লা (৩৮) একই এলাকার মোল্লা বাড়ির বিল্লাল মোল্লার পুত্র। গতকাল বিকালে র্যাব-১১ এর সিনিয়র এএসপি ও মিডিয়া অফিসার মো. রিজওয়ান সাঈদ জিকু এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, হত্যার শিকার আরিফ হোসেন তার মা খুকি বেগমের সঙ্গে আসামি জয়নাল গাজীর পরকীয়া সম্পর্কের কথা জানতেন। এ বিষয়ে মা ও ছেলের সম্পর্কের অবনতি হয়। ২০১৫ সালের শুরুতে ছেলে আরিফ হোসেন প্রেমের সম্পর্ক করে পার্শ্ববর্তী উত্তর আলগী ইউনিয়নের মিজিবাড়ির আব্দুস সালাম মিজির মেয়ে আসমা আক্তারকে (১৯) বিয়ে করেন। তাদের বিয়ে মা খুকি বেগম প্রথমে মেনে না নিলেও একপর্যায়ে মেনে নেন। এরপর মা, ছেলে ও ছেলের বউয়ের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে ঝগড়াবিবাদ হতো। এরই মধ্যে মা খুকি বেগম ছেলেকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারই আলোকে ২০১৫ সালের ১৬ নভেম্বর ছেলের বউ আসমা বেগমকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এরপর ১৮ নভেম্বর পরিকল্পিতভাবে মা খুকি বেগম নিজ গৃহে পরকীয়া প্রেমিক জয়নাল গাজী ও সহযোগীদের দিয়ে ছেলে আরিফকে ঘুমন্ত অবস্থায় হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে, দা দিয়ে কুপিয়ে এবং ব্লেড দিয়ে কেটে মৃত্যু হয়েছে মনে করে ঘরের মেঝেতে ফেলে চলে যায়। পরের দিন ১৯ নভেম্বর সকালে খুকি বেগম আরিফের স্ত্রী আসমাকে ফোন করে জানান, ডাকাতরা আরিফকে জখম করে ফেলে গেছে। আসমা তাৎক্ষণিক স্বামীর বাড়িতে চলে আসেন এবং আরিফকে উদ্ধার করে প্রথমে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে ঢাকা নেয়ার পথে মতলব ফেরিঘাটে পার হওয়ার সময় আরিফের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শাশুড়ি খুকি বেগমসহ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হাইমচর থানায় হত্যা মামলা (নং ৫) দায়ের করেন। ওই মামলায় ২০২৩ সালের ২৩ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৩০২/৩৪ ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।