রাজশাহী শহরে আনন্দ-উল্লাস আর নেচে গেয়ে প্রতিষ্ঠার তিন দশক পূর্তি উপদযাপন করেছে আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন জাতীয় আদিবাসী পরিষদ। এ সময় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি থেকে সরকারের কাছে সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনসহ মোট ৯ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গতকাল রোববার বেলা ১১টায় র্যালি করার জন্য শহরের গণকপাড়া মোড়ে সমবেত হতে শুরু করেন আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতারা। পরে বেলা বাড়ার সাথে সাথে সারাদেশ থেকে আদিবাসী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের হাজারো নারী-পুরুষ, তরুণ ও ছাত্র-যুবক পৃথক মিছিল নিয়ে প্রধান র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। পরে গণকপাড়া মোড় থেকে ওই বর্ণাঢ্য র্যালিটি বেরা করা হয়। র্যালি চলাকালীন শহরের বিভিন্ন স্থানে নিজস্ব বাদ্যযন্ত্রের তালেতালে নাচ গানে মেতে ওঠেন অদিবাসী জনগোষ্ঠীর নারীরা। একরকম আনন্দ উল্লাসেই তারা উপভোগ করেন বিশেষ এই দিনটিকে। এ সময় তাদের ব্যতিক্রম মনোমুগ্ধকর নৃত্য দেখতে জড়ো হয় রাজশাহী নগরীর উৎসুক জনতা। র্যালিতে আদিবাসীদের ছাত্র ও যুবকদের হাতে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতেও দেখা যায়। প্ল্যাকার্ডগুলো লেখা ছিল- ‘সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করো, করতে হবে’, ‘ভূমি অফিসের দুর্নীতি বন্ধ করো, করতে হবে’, ‘উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে আদিবাসী কোটা ও বৃত্তির ব্যবস্থা করো, করতে হবে’, মৃত ভেড়ার পরিবর্তে আদিবাসীদের পুনরায় ভেড়া প্রদান করতে হবে- ইত্যাদি ইত্যাদি।’
আদিবাসী পরিষদের সজ্জিত ওই র্যালিটি শহরের সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট, কুমারপাড়া, মনিচত্বর, সোনাদীঘি মোড় হয়ে বাটার মোড়ের ‘জয় বাংলা চত্বরে’ গিয়ে শেষ হয়। এ সময় সেখানে একটি ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে আদিবাসী জনতার সামনে বিভিন্ন রকম বক্তব্য তুলে ধরেন আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। এর আগে সমাবেশের উদ্বোধন ঘোষণা করেন আদিবাসী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রয়াত অনিল মারান্ডির সহধর্মিণী আগস্তিনা মুরমু। সভাপতিত্ব করেন পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি আইনজীবী বাবুল রবিদাস। সঞ্চালনা করেন পরিষদের কেন্দ্রীয় (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক গণেশ মার্ডি।