দেশের পর্যটন শিল্পের যাবতীয় বিষয় পর্যটক ও ভ্রমণপিপাসু মানুষদের জানাতে ‘বাংলাদেশ ফ্যাস্টিভ্যাল’ শিরোনামে চার দিনব্যাপী এক মেলার আয়োজন হতে যাচ্ছে। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বসবে এ মেলা। এতে ঐতিহ্যবাহী খাবারের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলার ঐতিহ্যবাহী পণ্য ও পর্যটন রিলেটেড যাবতীয় বিষয় স্থান পাবে। এসব বিষয় তুলে ধরতে বিভিন্ন জেলার হয়ে ৩০০ প্রতিষ্ঠান স্টল দিয়ে প্রতিনিধিত্ব করবে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও পর্যটন ভবনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংস্থাটির বোর্ড প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. জাবের সেখানে এ তথ্য জানান।
ট্যুরিজম অ্যান্ড গ্রিন ইনভেস্টমেন্ট থিম (বাংলা প্রতিপাদ্য- পর্যটনে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ) নিয়ে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের আয়োজন করছে বলে জানানো হয়েছে। বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. জাবের বলেন, এই উৎসবে এয়ারলাইন্স, হোটেল, রিসোর্ট, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, ট্যুরিস্ট-ভেসেল, ট্রাভেল এজেন্ট ও ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে। অংশগ্রহণ করবে বিভিন্ন জেলার পর্যটন পণ্য ও সেবা প্রদানকারী। দেশব্যাপী পর্যটনের বিভিন্ন অফার ও আয়োজন থাকবে এই উৎসবে। আগামীর বাংলাদেশে আসা দর্শনার্থীদের আকর্ষণীয় ট্যুর প্ল্যান তৈরি করতে সহায়তা করবে। এই উৎসবে আয়োজন থাকবে বিভিন্ন দেশের খাবারসহ বাংলাদেশের অথেন্টিক ও ঐতিহ্যবাহী খাবারের।
তিনি বলেন, এই মেলার মাধ্যমে দর্শনার্থীরা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ইতিহাস, ঐতিহ্য, পুরাকীর্তি, পর্যটন সম্পদ সম্পর্কে জানতে পারবেন। প্রতিটি জেলার পর্যটন আকর্ষণের ছবি দেখার সুযোগ পাবেন। দেশি-বিদেশি ইউনিক ও অথেন্টিক খাবার সম্পর্কে জানার এবং উপভোগ করার সুযোগ থাকবে উৎসবে। বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষ্যে চা পর্যটন, পর্যটক ও পর্যটন কেন্দ্রের নিরাপত্তা, আবাসন, পরিবহন, ডাটা ইনোভেশন, এসডিজি ও পর্যটন, পর্যটনে বিনিয়োগ সম্ভাবনা, পর্যটন খাতে মানব সম্পদ উন্নয়ন এবং পর্যটন শিল্পে নারীর অংশগ্রহণ ইত্যাদি বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। চার দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকবে গম্ভীরা, গাজী কালুর পট, পথনাট্য, বাউল গান, পুঁথি পাঠ ও কাওয়ালি ইত্যাদি। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপনের এই উদ্যোগ প্রতিবছর নিয়মিত একই সময়ে একই স্থানে করার জন্য পরিকল্পনা করছে।
এই উৎসব হবে একটি ফ্লাটফর্ম, যেখান থেকে বাংলাদেশের সব পর্যটন আকর্ষণ দেখার সুযোগ তৈরি হবে। বাংলাদেশ ফ্যাস্টিভ্যাল বাংলাদেশের সব ঐতিহ্যকে যেমন আপনার কাছে উপস্থাপন করবে তেমনি অপরূপ এই বাংলার আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ানোর সব সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরবে। সমৃদ্ধ বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার গল্পে বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য নিয়ে সাজানো হবে এই উৎসব। যাতে ভবিষ্যতে কাউকে বলতে না হয় ‘দেখা হয়নি চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া’। বাংলাদেশ ফ্যাস্টিভ্যাল আয়োজনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডকে সহায়তা করছে স্পেলবাউন্ড কমিউনিকেশন। আবু তাহের মো. জাবের বলেন, আমরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের দূতাবাসগুলোকেও আমন্ত্রণ জানাব। যাতে তারা আমাদের পর্যটন রিলেটেড বিষয়গুলো নিজের চোখে দেখতে পান। আমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার সম্পর্কে ধারণা নেন। পরবর্তীতে তারা তাদের দেশের পর্যটকদের মাঝে বিষয়গুলো শেয়ার করতে পারেন। দশটি সেমিনারের আয়োজন করা হবে। এসব সেমিনারে পর্যটনের সম্ভাবনা, সমস্যা, পরিবহন ব্যবস্থা, পর্যটনগুলোর সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা, ট্যুরিস্ট পুলিশের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি, পর্যটনে যারা কাজ করেন তাদের মানসিকতার উন্নয়নসহ নানা বিষয়ে সেমিনারগুলোতে অভিমত উঠে আসবে। পরবর্তীতে এসব অভিমত নিয়ে আমরা পর্যটনকে আরো কীভাবে উন্নত করা যায় সেই কাজ করব। সংবাদ সম্মেলনের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও পর্যটন রিলেটেড ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।