লাল স্বর্ণ
দেশের বাজারেও যার আকাশছোঁয়া দাম!
প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
চড়া দাম আর দুষ্প্রাপ্য। এই বিবেচনায় বিশ্বজুড়ে মশলাটিকে আখ্যায়িত করা হয় ‘লাল স্বর্ণ’ নামে। তীব্র শীতের দেশে উৎপাদিত বেগুনি রঙের এক ফুলের লাল গর্ভমু- শুকিয়ে সংগৃহীত হয় সেই স্বর্ণ। ১৫০টি ফুলের গর্ভমু- শুকিয়ে পাওয়া যায় মাত্র ১ গ্রাম। বছরে একবার ফলন দেওয়া গাছটি থেকে মশলা সংগ্রহ করার পুরো কাজ করতে হয় হাতে। তাই দামের পারদ সবর্দাই থাকে আকাশছোঁয়া। খাবারে সুগন্ধ আর আকর্ষণীয় রঙের যোগানদাতা মশলাটি আমাদের দেশে পরিচিত জাফরান নামে।’ ‘লাল স্বর্ণ’ খ্যাত জাফরান মূলত ক্রোকাস স্যাটিভাস পরিবারের একটি লিলি জাতীয় উদ্ভিদ। অঞ্চলভেদে নানান রকমের গালভরা নাম আছে এই মশলাটির। কেশর, কুমকুম, সাফরান কিংবা ইসপাগনল- বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নামে পরিচিত দামি মশলা জাফরান। জাফরানের আদি উৎপত্তিস্থল মূলত গ্রিস। তবে শীতপ্রধান অঞ্চল যেমন- ইরান, স্পেন, কাশ্মীরে জাফরানের উৎপাদন অনেক বেশি হয়। সাধারণত একটি জাফরান ফুল থেকে ৩০ মিলিগ্রাম ওজনের জাফরান পাওয়া যায়, যা শুকনো অবস্থায় নেমে আসে ৭ গ্রামে। ১ গ্রাম জাফরান পেতে প্রয়োজন হয় ১৫০টি ফুলের। অর্থাৎ, ১ কেজি শুকনো জাফরান পেতে দেড় লাখ জাফরান ফুলের প্রয়োজন পড়ে। প্রায় ৫০ হাজার বছর পূর্বে বর্তমান ইরাকের একটি গুহায় আঁকা ছবিতে রং হিসেবে মানুষ প্রথমবার বন্য জাফরান ব্যবহার করেছিল।
প্রাচীন সুমেরীয়, অ্যাসিরিয়া ও ব্যাবিলনীয় সভ্যতার গ্রন্থগুলোতে ওষুধ ও রং হিসেবে জাফরান ফুল ক্রোকাস ব্যবহারের বর্ণনা পাওয়া গেছে। তবে বিশ্লেষকরা ইতিহাস থেকে যুক্তি দেন যে, প্রাচীন গ্রিসের মিনোয়ান সভ্যতার শিল্পকর্মগুলো সম্ভবত জাফরান ব্যবহারের সবচেয়ে প্রাচীন উদাহরণ। যেমন- প্রায় ১ হাজার ৬০০ খ্রিষ্টপূর্বে সান্তোরিনি দ্বীপের ফ্রেস্কো ‘দ্য স্যাফ্রন গাদারার্স’- চিত্রটিতে ক্রোকাস ফুলের ঘন পাপড়িগুলো জাফরান চাষের ধারণা দেয়।