মমেক হাসপাতালে তুলকালাম কাণ্ড

প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

রাতভর তুলকালাম কাণ্ড ঘটে গেছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে। আগে রোগী দেখানোকে কেন্দ্র করে ওয়ার্ডে শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। যেটি পরে পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে গড়ায় পুলিশ ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সংঘর্ষে। এতে দুই পুলিশসহ ৮ ইন্টার্ন চিকিৎসক আহত হন। এর মধ্যে দুইজনকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে তিন দিনের কর্মবিরতি পালন করছে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতাল থেকে পুলিশ ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়াসহ ক্যাম্পের ইনচার্জ ও এক কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে জেলা পুলিশ। জানা গেছে, গত বুধবার রাত ১০টার দিকে স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিনের চিকিৎসার জন্য শেরপুর থেকে মমেক হাসপাতালের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে যান মাহমুদুল হাসান নামে পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শক। এ সময় তিনি নিজের পরিচয় দিয়ে স্ত্রীকে আগে দেখানোর চেষ্টা করেন। অন্য রোগী থাকায় আগে দেখানো যাবে না বলে তাকে জানান দায়িত্বরত আনসার সদস্য মোবারক হোসেন। একপর্যায়ে তিনি মাহমুদুলকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। এতে শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। এ সময় হট্টগোল দেখে সেখানে কর্তব্যরত নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক রোগীর স্বজনদের সরিয়ে দিতে বলেন আনসার সদস্যকে। এ সময় মাহমুদুলের ছেলে মাহাদি ওই চিকিৎসককে গালি দেন। এতে আনসার সদস্য ক্ষিপ্ত হলে একপর্যায়ে মাহমুদুল হাসান জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান। পরে মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ গিয়ে রোগীসহ স্বজনদের পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে যান। এ ঘটনায় পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার কারণ জানতে চান ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. মাহিদুল হক অয়ন। এতে আবারো শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। একপর্যায়ে ওই ওয়ার্ডে চিকিৎসককে গালি দেওয়া রোগীর ছেলে মাহাদিকে আঘাত করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এ সময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা তাদের বাধা দিলে আঘাত পান ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. অয়ন। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পুলিশ মেরেছে- এমন খবর পেয়ে সব ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থী মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পে গেলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারামারিতে অন্তত আটজন আহত হন। এর মধ্যে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাবেক সভাপতি ডা. শামীম রেজা ও ডা. সাদিককে আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় গত বুধবার রাতভর হাসপাতালে বৈঠক হয়। সেখানে সিটি মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু ও জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঁঞাসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিল। দীর্ঘ আলোচনার পর পুলিশের মেডিকেল ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই রফিকুল ইসলাম ও কনস্টেবল আরিফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পের সব পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ ক্যাম্পটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ। এ ঘটনায় কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।