জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। গতকাল মঙ্গলবার ইউজিসি’র এক অফিস আদেশে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন ক্যাম্পাসে স্নাতক প্রোগামে শিক্ষার্থী ভর্তিসহ সকল কার্যক্রম স্থগিতকরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অন ক্যাম্পাস স্নাতক প্রোগামে শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ কেন নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল ক্যাম্পাসে স্নাতক প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বিধায় ইউজিসি এ নির্দেশনা প্রদান করেছে।
গত সোমবার কমিশন কর্তৃপক্ষ এক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে এ নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে (গাজীপুর) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ২০ জুলাই ২০২৩ তারিখে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে এলএলবি, বিবিএ, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট এবং নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্স বিষয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়।
প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটি কমিশন কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। নির্দেশনায় আরো বলা হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২ অনুযায়ী, দেশের ‘কলেজ শিক্ষার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠক্রম ও পাঠ্যসূচির আধুনিকীকরণ ও উন্নতিসাধন, শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও যোগ্যতা বৃদ্ধিসহ কলেজের যাবতীয় বিষয় ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ন্যস্ত করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়’ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়; এবং ওই আইনের ধারা-৬ অনুযায়ী ‘এই আইন এবং অর্ডার এর বিধান সাপেক্ষে’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতা নির্ধারিত।’ ধারা-২(গ) অনুযায়ী ‘অর্ডার’ অর্থ টহরাবৎংরঃু এৎধহঃং ঈড়সসরংংরড়হ ড়ভ ইধহমষধফবংয ঙৎফবৎ, ১৯৭৩ (চ. ঙ. ঘড়. ১০ ড়ভ ১৯৭৩)”; এবং আইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান সংক্রান্ত ধারা-৮(১) অনুযায়ী ‘ডিগ্রি, ডিপ্লোমা এবং সার্টিফিকেট প্রদান সংক্রান্ত সকল স্বীকৃত শিক্ষাদান সাধারণতঃ কলেজ, স্কুল, এবং কেন্দ্র দ্বারা এককভাবে বা পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহিত সহযোগিতায় অথবা এতদুদ্দেশ্যে একাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক অনুমোদিত অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন প্রতিষ্ঠানের সহিত সহযোগিতায় পরিচালিত হবে এবং আইনে স্নাতকপূর্ব শিক্ষাবিষয়ক স্কুল সংক্রান্ত ধারা-২৮(১) অনুযায়ী ‘স্নাতকপূর্ব শিক্ষাবিষয়ক স্কুল একাডেমিক কাউন্সিল এবং সিন্ডিকেটের সার্বিক তত্ত্বাবধানে কলেজের স্নাতকপূর্ব শিক্ষা সংগঠিত করবে, পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচি নির্ধারণ করিবে, একাডেমিক কাউন্সিলের বিবেচনার জন্য পরীক্ষা বিধি সুপারিশ করিবে, প্রশিক্ষণের মান সংরক্ষণ করিবে এবং শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করবে।’ আইনের উক্ত ধারাসমূহ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে (গাজীপুর) স্নাতক প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির নিমিত্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কমিশন ইস্যুকৃত নির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির সকল কার্যক্রম স্থগিতকরণসহ কিসের ভিত্তিতে অন ক্যাম্পাস স্নাতক প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রমাণকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্য কমিশনে প্রেরণের অনুরোধ করা হয়।