শাহবাগে উদীচীর সাংস্কৃতিক সমাবেশ
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করেই কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার স্বভাবকবি খ্যাত লোককবি রাধাপদ রায়ের ওপর দুর্বৃত্তদের ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদ এবং প্রধান আসামিসহ এ ঘটনার ইন্ধনদাতাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় এ সাংস্কৃতিক সমাবেশ। উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান-এর সভাপতিত্বে সমাবেশে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ এবং ঢাকা মহানগরের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন শাখা সংসদের শিল্পী-কর্মীরা ছাড়াও সমমনা বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে শুরুতেই বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম। এরপর একে একে বক্তব্য রাখেন প্রতিবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক গণসংগঠনগুলোর পক্ষে রঘু অভিজিৎ রায়, গণজাগরণ মঞ্চণ্ডএর অন্যতম সংগঠক জীবনানন্দ জয়ন্ত ও আকরামুল হক। এরপর বক্তব্য রাখেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে। তিনি বলেন, একজন বর্ষীয়ান লোককবির ওপর এ ধরনের হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তার ওপর হামলাকারী সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করে দম্ভোক্তির সঙ্গে উল্লেখ করেছে যে ‘হেঁদু মারলে কিছু হয় না’। বেশ কয়েক বছর ধরে হিন্দু সম্প্রদায়সহ দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর যে ধারাবাহিক হামলা হচ্ছে তার কোনোটিরই বিচার না হওয়ার কারণেই লোককবির ওপর হামলাকারী এমন দম্ভোক্তি করার সাহস পেয়েছে। অবিলম্বে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান উদীচীর সাধারণ সম্পাদক।
সমাপনী বক্তব্যে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান বলেন, লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে একজন বর্ষীয়ান লোককবির উপর যে নৃশংস কায়দায় হামলা চালানো হয়েছে তার নিন্দায় সোচ্চার হয়েছে সারাদেশ। বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতি মেনে চললে আজকের বাংলাদেশে এমন ঘটনা দেখতে হতো না।
একজন আসামি গ্রেপ্তার হলেও লোককবি রাধাপদ রায়ের ওপর হামলায় জড়িত অন্যজনকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি। এ ঘটনার ইন্ধনদাতাদেরও খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান উদীচীর সভাপতি। সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, দেশের জেলা উপজেলা পর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরেই কবি-সাহিত্যিক-সংগীত ও নাট্যশিল্পীসহ সংস্কৃতিকর্মীদের ওপর হামলা করা, ভয়ভীতি দেখানোসহ নানাভাবে সুস্থ ধারার সংস্কৃতিচর্চাকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। লোককবি রাধাপদ রায়ের ওপর হামলা তারই ধারাবাহিকতা। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী অপশক্তি দেশে অসাম্প্রদায়িক, মৌলবাদবিরোধী সুস্থ ধারার সংস্কৃতিচর্চাকে বাধা দিতে চায়।