পারমাণবিক জ্বালানি হস্তান্তর
শিক্ষার্থীদের জন্য রসাটমের বিশেষ আয়োজন
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
গত ৫ অক্টোবর ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সাইটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাশিয়া বাংলাদেশকে পারমাণবিক জ্বালানি হস্তান্তর করে। তবে, এই জ্বালানি হস্তান্তর উপলক্ষ্যে বেশ আগে থেকেই বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু সংস্থা রসাটম। এই কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য ছিল স্থানীয় জনগণের মধ্যে পরমাণু শক্তি বিষয়ে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি এবং শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে আগ্রহী করে তোলা। গত ৫ অক্টোবর সকালে রসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ রূপপুরের গ্রিন সিটিতে আয়োজিত এমন একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মানতিতস্কিসহ রসাটমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানে লিখাচেভ স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং বিজ্ঞানভিত্তিক গেম ‘গোল্ডবার্গ’-এ অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে প্রদত্ত বক্তব্যে রসাটম ডিজি বলেন, ‘তোমাদের কোনো নতুন আইডিয়া সৃষ্টি করার সঙ্গে সঙ্গে এর ব্যবহারিক বাস্তবায়নেও প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এর আগে পারমাণবিক জ্বালানি বিষয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত ঈশ্বরদীর ২০টি স্কুলে ভিডিও প্রদর্শন ও লেকচার সেশনের আয়োজন করে রসাটম। প্রায় ১,০০০ স্কুল শিক্ষার্থী এই সেশনগুলোতে অংশগ্রহণ করে। সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে এবং অক্টোবরের প্রথম দিকে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘প্রেসাইজ এনার্জী’ শীর্ষক দুই সপ্তাহব্যাপী একটি বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড আয়োজন করে রসাটমের প্রকৌশল শাখা। এ আয়োজনে যুক্ত ছিল রাশিয়ার স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ‘মেফি’। সার্বিক সহযোগিতা করে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন। জুনিয়র গ্রুপে স্থানীয় ৩২টি স্কুল এবং সিনিয়র গ্রুপে স্থানীয় কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১,২০০ এর অধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। অলিম্পিয়াডের বিষয় ছিল গণিত, রসায়নশাস্ত্র ও পদার্থবিদ্যা। অক্টোবরের ২ তারিখে ঈশ্বরদীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে অলিম্পিয়াডের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন এতমস্ত্রয় এক্সপোর্টের হেড অব কমিউনিকেশন্স নিনা দেমেন্তসোভা এবং মেফি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের উপ-প্রধান আলেক্সান্ডার নাখাবভ। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শামীমা খাতুন গণিতে, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সজীব মিয়া পদার্থবিদ্যায়, এবং কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. নিরব হোসেন রসায়নশাস্ত্রে প্রথম স্থান অধিকার করেন। জুনিয়র লেভেলে প্রথম স্থান অধিকার করে ভাষা শহীদ বিদ্যা স্কুলের শিক্ষার্থী মো. সাদমুন সাকীম। পারমাণবিক বিদ্যুতের ইতিবাচক বিভিন্ন দিক তুলে ধরার লক্ষ্যে রূপপুরের গ্রিন সিটির সীমানা দেয়ালে ৩৮০ বর্গমিটারজুড়ে বর্ণিল গ্রাফিটি অঙ্কন করা হয় রসাটমের উদ্যোগে। গ্রাফিটির কাজ করেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী টিপু সুলতানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা। রূপপুর প্রকল্পে স্থাপিত হচ্ছে দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট, যার প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা ১,২০০ মেগাওয়াট। প্রতিটি ইউনিটে থাকছে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর রিয়্যাক্টর, যেগুলো সব আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চাহিদা পূরণে সক্ষম। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জেনারেল ডিজাইনার ও কন্টাক্টর রাশিয়ার রসাটম কর্পোরেশনের প্রকৌশল শাখা।