ঢাকা ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জলবায়ু ঝুঁকি কমাতে পারে

‘প্রাক-মৌসুমি ও মৌসুমি কৃষি পূর্বাভাস’

‘প্রাক-মৌসুমি ও মৌসুমি কৃষি পূর্বাভাস’

বাংলাদেশের জলবায়ু ঝুঁকি কমানোর মূল চাবিকাঠি হতে পারে ‘প্রাক-মৌসুমি ও মৌসুমি কৃষি পূর্বাভাস’। একই সঙ্গে এটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ রূপকল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং বাংলাদেশে একটি সমৃদ্ধ কৃষি খাত গড়ে তোলার জন্য এই সিস্টেম অগ্রগামী ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন কৃষি, জলবায়ু এবং আবহাওয়ার বিশেষজ্ঞরা। গত রোববার বাংলাদেশ মিলিটারি মিউজিয়ামের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত বাংলাদেশে জলবায়ু ঝুঁকি কমাতে ‘প্রাক-মৌসুমি ও মৌসুমি কৃষি পূর্বাভাস’ ব্যবহারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা শীর্ষক সভায় তারা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ড. মো. শাহ কামাল খান, প্রকল্প পরিচালক, এএমআইএসডিপি সঠিক সময়ে কৃষকদের আবহাওয়া তথ্য প্রদানের তাৎপর্য তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্ত, বাংলাদেশ আবহাওয়া বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে যে পূর্বাভাস সিস্টেম তৈরি করেছে তা প্রশংসাযোগ্য। বিশ্বের মধ্যে মাত্র অল্প কয়েকটি দেশে এ ধরনের আগাম পুর্বাভাসের সিস্টেম রয়েছে, বাংলাদেশ যার মধ্যে আজ অন্যতম হিসেবে স্থান করে নিল।

নেদারল্যান্ডসের ‘ওয়েদার ইমপ্যাক্ট বিভি’-এর গবেষক এবং প্রকল্প সমন্বয়কারী বব আমেরলান ‘সাব-সিজনাল থেকে সিজনাল ফোরকাস্টিং সিস্টেম’-এর উপর একটি বিস্তারিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এই অনুষ্ঠানে। তার উপস্থাপনায় আগামী সপ্তাহ হতে আগামী এক দশকে বাংলাদেশের কৃষিতে কী ধরনের প্রতিকূলতা আসতে পারে তা তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান জনাব ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এই উদ্যোগের প্রশংসা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষির জন্য সাব-সিজনাল থেকে সিজনাল ফোরকাস্টিং সিস্টেম একটি নতুন অধ্যায়, যা কৃষক এবং কৃষি সংশ্লিষ্ট সকলকে ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় সহায়তা করবে। এটি স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং বাংলাদেশে একটি সমৃদ্ধ কৃষি খাত গড়ে তোলার জন্য এই সিস্টেম অগ্রগামী ভূমিকা পালন করবে। উল্লেখ্য, গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ ক্রমাগত জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অধীনে ‘কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ’ প্রকল্পের আওতায় তৈরি করা হয় ‘সাব-সিজনাল টু সিজনাল ফোরকাস্টিং সিস্টেম’। প্রথাগতভাবে, বাংলাদেশি কৃষকরা সীমিত কয়েক দিনের জন্য পূর্বাভাস পান যা তাদের প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য সবসময় প্রস্তুত রাখতে পারে না। ‘সাব-সিজনাল টু সিজনাল ফোরকাস্টিং সিস্টেম’ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুর্যোগ পরিস্থিতির কথা জানিয়ে দেবে দুই সপ্তাহ থেকে এক মাস আগেই। বাংলাদেশ আবহাওয়া দপ্তরের সম্পৃক্ততায় ডাচ্ সংস্থা ওয়েদার ইমপ্যাক্ট এবং ওয়াখেনিংগেন ইউনিভার্সিটি, ডিজিটাল ইনোভেশন ফর ইমপ্যাক্ট (ডিআইআই) এবং রয়্যাল নেদারল্যান্ডস মিটিওরোলজিক্যাল ইনস্টিটিউট (কেএনএমআই) এর যৌথ উদ্যোগে এই সিস্টেম তৈরি হয়েছে। সভায় ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচার প্রজেক্টের প্রধান ইশরাত জাহান, বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের জলবায়ু নীতি উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, আইইউসিএন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রকিবুল আমিন, এবং সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক তানিয়া শারমিন আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত