অভয়াশ্রমেও চলছে ইলিশ শিকার

প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  বরিশাল ব্যুরো

মৎস্যসম্পদ বাড়াতে ইলিশ ধরার ওপর সরকার নির্ধারিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। এ নিষেধাজ্ঞা না মেনে মেঘনা নদীতে ইলিশের অভয়াশ্রমে মাছ শিকার করছেন কিছু জেলে। শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলা, বরিশাল জেলার হিজলা ও মুলাদী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় মেঘনা ও তার শাখানদী এবং কীর্তনখোলা নদী মিলিয়ে ৩১৮ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ২০১৯ সালে দেশের ষষ্ঠ অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়। এই অভয়াশ্রমে প্রজননের জন্য মা ইলিশ অবস্থান করে। কিছু অসাধু জেলে এই এলাকায় মাছ শিকার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন ভোরে এবং রাতে ইঞ্জিনচালিত ছোট ছোট ট্রলারে মাছ শিকারে নামেন তারা। এদের অধিকাংশ পেশাদার হলেও কেউ কেউ মৌসুমি জেলে। শুধু শিকার করেই তারা থামছেন না, আশপাশের বাজারে জটলা করে মাছ বিক্রিও করছেন তারা। এ ব্যাপারে অবগত থাকলেও জেলেদের মারমুখী অবস্থানের কারণে প্রশাসন নিশ্চুপ আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বরিশালের হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের আবুপুর লঞ্চঘাট সংলগ্ন নদীতে বেশ কয়েকটি ইঞ্জিনচালিত ছোট ট্রলারে ইলিশ শিকার চলছে। ওই এলাকার জেলেরা জানিয়েছেন, শুধু আবুপুর নয় হিজলা, মুলাদি, মেহেন্দীগঞ্জ, চাঁদপুরের হাইমচর থেকে শুরু করে ভোলার তেঁতুলিয়া নদী পর্যন্ত শাখানদীগুলোতে সংঘবদ্ধভাবে মাছ শিকার করেন জেলেরা। এসব মাছ নিকটস্থ চাঁদপুর, শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হয়। এমনকি মেঘনার তীরের আবুপুর, হিজলা-গৌরবদি ইউনিয়নের খালিসপুর, জানপুর এলাকায় রাখঢাক ছাড়াই মা ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে। আবুপুর এলাকার জেলে আবু হোসেন বলেন, সরকার থেকে যে প্রণোদনা দেয় তা আমরা পাই না। সংসার তো চালাতে হবে। এজন্য বাধ্য হয়ে নদীতে মাছ শিকারে নামতে হচ্ছে। হাশেম মিয়া নামে আরেক জেলে বলেন, সরকারের সহায়তা আমাদের হাত পর্যন্ত এসে পৌঁছায় না। যার ফলে পরিবার নিয়ে চলতে কষ্ট হয়। তাই বাধ্য হয়ে মাছ ধরতে নেমেছি। এই এলাকায় প্রশাসন কম আসে বলে এখানে এসেছি। রুবেল মৃধা নামে আরেক মাঝি বলেন, প্রশাসন শুধু আমাদের সঙ্গেই পারে। আমাদের এখানে নিষেধাজ্ঞার সময়ে ভারতের জেলেরা ঠিকই মাছ ধরে নিয়ে যায়। তাছাড়া আমরা মাছ শিকারে না নামলে এলাকার নেতারা লোক দিয়ে জাল ফেলে। মাছ তো শিকার বন্ধ হচ্ছে না। অন্যরা মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে, আমি ধরলে দোষের কী! হরিনাথপুর ইউনিয়নের এক জনপ্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই অঞ্চলটির জেলেরা অনেক মারমুখী। বিগত ২ থেকে ৩ বছরে ৪ থেকে ৫টি হামলা করেছে প্রশাসনের ওপর। তাদের হামলার শিকার হয়েছে কোস্টগার্ড, পুলিশ, মৎস্য কর্মকর্তা এমনকি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও। এই অঞ্চলে ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন আছেন যারা জেলেদের দিয়ে ইলিশ শিকার করান।