অবৈধ যান ঠেকাতে এবং যানজট নিরসনে নগরীতে চলবে এবার এক কালারের রং করা বৈধ অটোরিকশা। পুরোদমে চলছে অটো রঙের কাজ। এতে করে যানজট যেমন কমবে তেমনি অবৈধ অটোরিকশা চিহ্নিত করা সম্ভব হবে সহজে। রংপুর নগরীর প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে ছোট-বড় সব সড়কই এখন ব্যাটারিচালিত অটো ও চার্জার রিকশার দখলে। এদের দাপটে নাকাল হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। যে সড়কেই যাবেন, সেখানেই অটোরিকশা।
হাজারও অটোরিকশার চাপে পিষ্ট নগরবাসী। ঘর থেকে বেরোলেই তাদের নিত্যসঙ্গী এখন যানজট। বিশেষ করে নগরীর ধাপ মেডিকেল মোড়, চেক পোস্ট থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়, ডিসির মোড় হয়ে সিটি বাজার, জাহাজ কোম্পানি মোড় থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তীব্র যানজট দেখা যায়। অটোরিকশার লাগামহীন বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে রংপুর অচিরেই পরিত্যক্ত নগরীতে পরিণত হবে বলে আশঙ্কা অনেকের। এই যানজট লাঘবে রংপুর মহানগর ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিনিয়ত পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছে সড়কে। কখনো রোড ডিভাইডার, কখনো একপথ বন্ধ অন্য পথ খোলা, ঈদের আগে টাউনহল থেকে জাহাজ কোম্পানি মোড় পর্যন্ত অটো প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা। এ রকম অনেক রকমের উদ্যোগ নিলেও কোনো উদ্যোগই সুফল বয়ে আনেনি। সবশেষ ৩৫ লাখ ৪৭ হাজার ১০০ টাকা ব্যয়ে নগরীর জাহাজ কোম্পানির মোড়, বাংলাদেশ ব্যাংক মোড় এবং লাল কুটির মোড়ে ডিজিটাল ট্রাফিক সিগন্যাল সিস্টেম স্থাপন করা হয়। এই ডিজিটাল ট্রাফিকব্যবস্থা চালুর পরও কমেনি যানজট।
রংপুর সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, নগরীতে নিবন্ধনকৃত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংখ্যা ৫ হাজার ৪৪০টি। কিন্তু বাস্তবে রাস্তা চষে বেড়াচ্ছে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার। অর্থাৎ, বাকি ১৫ থেকে ২৫ হাজারই অবৈধ। নিবন্ধনহীন এসব অটোরিকশার দাপটে নাভিশ্বাস সবার। অটো শ্রমিক সোসাইটি রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি নুরুল হক বলেন, সিটি কর্পোরেশন থেকে নিবন্ধিত অটোগুলো সব নীল রং করা হচ্ছে। প্রথম প্রথম অনিহা থাকলেও প্রতিদিন রং করা অটোর সংখ্যা বাড়ছে। এরই মধ্যে প্রায় ২ হাজার অটো রং করাা হয়েছে। আর পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে সব অটো রং করা হবে। সব অটো রং করা শেষে অটোগুলো সড়কে চলাচল শুরু করলে বাইরের অটো যেমন নগরীতে প্রবেশ কবে না, তেমনি নগরীর মধ্যে অবৈধ অটো রিকশা আর চলাচল করতে পারবে না।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক মেনহাজুল আলম জানান, সিটি করপোরেশন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, অটো মালিক ও শ্রমিক মিলে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নগরীতে অবৈধ যান ঠেকাতে এবং যানজট নিরসনে নীল কালারের অটো চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিটি করপোরেশনের নিবন্ধনকৃত অটোগুলোকে নীল কালার করছেন অটো মালিক ও শ্রমিকরা। নীল কালার হলে সিটি করপোরেশন থেকে আরো একটি কোর্ড নম্বর দেওয়া হবে। যাতে কেউ নতুন করে নীল কালার করতে না পারে। নিবন্ধিত অটো নীল কালার হয়ে গেলে সহজেই বৈধ অবৈধ অটো নিরূপণ করা যাবে। এতে অটোমেটিক নগরীতে অটো কমে আসবে এবং যানজট কমবে। রংপুর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ মাহবুবার মঞ্জু জানান, যানজট নিরসনে ও অবৈধ অটোরিকশা রোধে সড়কে এক রঙের অটো চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী অটো রঙের কাজ চলমান রয়েছে। রং করার পরপরই সড়কে অটোগুলো চলছে। তবে সব অটো রং হয়ে গেলে সহজে অবৈধ অটো যেমন চিহ্নিত করা যাবে, তেমনি যানজট কমে আসবে।