জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ও ছাত্রী হল মিলিয়ে বর্তমানে হলের সংখ্যা সর্বমোট ৪টি। বঙ্গবন্ধু হল তাদের মধ্যে অন্যতম একটি বড় হল। অত্যাধুনিক সুবিধা সংবলিত ইংরেজি বর্ণ ‘ঐ’ আকৃতির এই হলটিতে আবাসিক শিক্ষার্থী সংখ্যা ১২৮০। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরের দূরদর্শিতায় ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি উদ্বোধন হওয়া এই হলটিতে রয়েছে মুদি দোকান, ক্ষৌরালয়, ওয়াশিং রুম, ক্রীড়া কক্ষ, বিনোদন কক্ষ, মসজিদ, প্রার্থনা কক্ষ, বঙ্গবন্ধু করনার, নিউজ রুম ও মিলনায়তনসহ রিডিং রুম। তবে ১২৮০ জন শিক্ষার্থীদের জন্য একটি রিডিং রুম থাকলেও সংকুলান না হওয়ায় প্রায় ১০০ আসনবিশিষ্ট আরো একটি রিডিং রুম পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। বঙ্গবন্ধু হলের ৪র্থ তলায় হচ্ছে এই রিডিং রুম। বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ মাসুম হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্যেই রিডিং রুমে চেয়ার-টেবিল সংযোজনসহ পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এ সপ্তাহের মধ্যেই প্রয়োজনীয় সাজসজ্জা শেষে রিডিং রুমটি চালু হবে বলেও জানা গেছে। নতুন রিডিং রুম সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু হলের ৫৩০ নং কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু হল হওয়াতে পড়াশোনার পরিবেশ অনেক সুন্দর হয়েছে। রিডিং রুমে পড়ুয়াদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেস থেকে এসেও অনেকের পড়তে আসতে দেখা যায়। এ অবস্থায় নতুন আর একটি রিডিং যুক্ত হচ্ছে। এটি একটি চমৎকার উদ্যোগ। আরো একটি রিডিং রুম করায় হল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ২২৪ নং কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এম এইচ ফাহিম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্রদের অনুপাতে এতদিন ৭ম তলায় যে রিডিং রুম ছিল তা পর্যাপ্ত ছিল না। হল প্রশাসনের তত্বাবধানে ৪র্থ তলায় যে নতুন আরো একটি রিডিংরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তাতে আবাসিক ছাত্রদের রিডিংরুমে গিয়ে পড়ালেখা করার প্রতি আগ্রহী করে তুলবে বলে আমি মনে করি। ৫১১ নং রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যতদিন বঙ্গবন্ধু হলে আছি ততদিন পড়াশোনা করার জন্য একটি নির্ঝঞ্ঝাট পরিবেশ পেয়েছি। রুমে পড়ার পাশাপাশি মাঝেমধ্যে রিডিংরুমে যাওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেছি। রিডিং রুমের দরজার সামনে গিয়ে দেখি পুরো রুম ভর্তি শিক্ষার্থী পড়াশোনায় মগ্ন। মনে হলো আমার এই আগমন তাদের কাছে অনাহূত প্রবেশ ঠেকছে। পরে আর প্রবেশ করিনি। সুপরিসরে নতুন আরেকটি রিডিং রুম হওয়ায় আরো অধিক শিক্ষার্থীর আসন সংখ্যা যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি নিরিবিলি পড়াশোনার পথ আরো সুগম হলো। এখন চাইলেই রিডিং রুমে গিয়ে পড়তে পারব আশা করি। জোরালো দাবি উঠার আগেই হল প্রশাসন প্রয়োজন বুঝতে পেরে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে পড়াশোনা। হল প্রশাসন নানাভাবে পড়াশোনার পরিবেশ তৈরি করে চলেছে। হল প্রশাসনের এমন শিক্ষার্থীবান্ধব উদ্যোগগুলোর জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু হলের হাইজ টিউটর মো. তারিফুল ইসলাম বলেন, সম্মানিত প্রাধ্যক্ষ মাসুম হাওলাদার স্যারের নেতৃত্বে আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বাস্তবায়নযোগ্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বঙ্গবন্ধু হলের শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় বা চাহিদাকৃত সুযোগ-সুবিধাগুলোকে হল প্রশাসন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বাস্তবায়ন করে এসেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর স্যারের নেতৃত্বে শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়নের মোটোকে সামনে রেখে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে। এই অগ্রযাত্রায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ আবশ্যক। বঙ্গবন্ধু হলে এরই মধ্যে যে রিডিং রুমটি ছিল সম্প্রতি সেটির ধারণক্ষমতা অপ্রতুল হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করেই সমধারণক্ষমতা সম্পন্ন আরেকটি রিডিংরুম তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ মাসুম হাওলাদার বলেন, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করার জন্য আগ্রহী বিষয়টি খুবই প্রশংসনীয়। শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী আমরা আরো একটি রিডিংরুম করছি। শিক্ষার্থীরা যাতে মনোরম পরিবেশে পড়ালেখা করতে পারে এজন্য আগের রিডিংরুমের সৌন্দর্যও বর্ধন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর স্যার আমাদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করছেন। এজন্য স্যারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা সবাই উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করুক। শিক্ষার্থীরা তাদের যেকোনো ধরনের সমস্যা বা যৌক্তিক সুযোগ-সুবিধার কথা সরাসরি আমাদের কাছে উপস্থাপন করবে। আমরা আমাদের সাধ্যের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে সেগুলো বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করব।