জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের তাপমাত্রা যেভাবে বেড়ে চলছে, এভাবে চলতে থাকলে খুব শিগগিরই খরা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। তাপমাত্রা আরো দুই ডিগ্রি বাড়লে বর্তমানে বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চলে যে খরা হচ্ছে তা ক্রমান্বয়ে দেশের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে। এতে খাদ্য নিরাপত্তায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল। গতকাল সকালে রাজধানীর পিআইবি মিলনায়তনে ‘জার্নালিজম ইন দ্য এজ অব ক্লাইমেট অ্যাকশন : কপ ২৮ কাভারেজ স্ট্র্যাটেজিকস অ্যান্ড মেনটরিং’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনের (কপ ২৮) সংবাদ গ্রহণের প্রস্তুতির লক্ষ্যে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এবং প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এই কর্মশালার আয়োজন করেছে। আরো ১০টি পরিবেশবাদী সংগঠন এই আয়োজনে সহযোগী হিসেবে রয়েছে। অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে বিগত জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে (কপ) আলোচনা হলেও ফান্ড নিয়ে তেমন কোনো কথা হয়নি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাপমাত্রা বাড়ছে, কোথাও কমছে। আর তাপমাত্রা বাড়ার কারণে মানুষের কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমানে গ্রিন ইন্ডাস্ট্রির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু তার জন্য যে অর্থায়ন প্রয়োজন, তা কে দেবে? বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বিশ্বের সপ্তম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। বিশ্বের তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি রাখতে পারলে দুর্যোগে ক্ষতি কম হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে এখন ছয় ঋতু খুঁজে পাওয়া যায় না। আমরা এখন বছরের ৯ মাস উত্তাপের মধ্যে কাটাই। শীতের প্রকোপও অনেক বেড়েছে। তিনি বলেন, বিগত জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে অনেক কথা বলা হয়েছে, কিন্তু ফল শূন্য। আসন্ন দুবাই সম্মেলন যাতে এই অবস্থায় না পড়ে, তা খেয়াল রাখতে হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়বিষয়ক সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কর্মশালার প্রধান সমন্বয়কারী, ক্যাপস ও স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার। এতে প্রশিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত। কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, সিপিআরডির মো. শামসুজ্জোহা প্রমুখ।