রাজশাহীতে নানা আয়োজনে জেলহত্যা দিবস পালিত
প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
রাজশাহী ব্যুরো
গতকাল বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে গভীর শোক ও বিনম্র শ্রদ্ধায় রাজশাহীতে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানসহ জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, রাজশাহী সিটি করপোরেশন ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতীয় নেতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কোরআন খতম, শোক পদযাত্রা, আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় মহানগর আওয়ামী লীগের কুমারপাড়া দলীয় কার্যালয়ে স্বাধীনতা চত্বরে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সন্তান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এরপর দলীয় কার্যালয় থেকে বের করা হয় বিশাল শোক পদযাত্রা। শোক পদযাত্রাটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে মহানগরীর কাদিরগঞ্জে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এরপর মাজার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল। স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহ্সানুল হক পিন্টুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা। দোয়া পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য প্রফেসর বারকুল্লাহ বিন দুরুল হুদা। উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সদস্য আখতার জাহান, আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি শাহীন আকতার রেণী, নাঈমুল হুদা রানা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসলাম সরকার, দপ্তর সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম বুলবুলসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে এবং ৩ নভেম্বর কারাগারের ভেতরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা একই সূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলার বিচারের রায় হয়েছে। রায় আংশিক কার্যকর হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ডসহ বিদেশে পলাতক আসামিদের দেশে ফিরে এনে রায় কার্যকর করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার।
তবে সরকারের এ চেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ওই সমস্ত দেশ যারা খুনিদের নানা অজুহাতে ফেরত দিতে চায় না। এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ব্যক্তি কারা ছিলেন, তাদের দেখতে চায় জাতি। হত্যাকাণ্ডের সুবিধাভোগী ও নেপথ্যের কুশীলবদের খোঁজার জন্য কমিশন গঠন এখন সময়ের দাবি। রাজশাহীতে গতকাল জেলহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে রাসিকের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল- কালো ব্যাজ ধারণ, কোরআন খতম, দোয়া মাহফিল, খাবার বিতরণ, বাদ জুমা নগরীর সব মসজিদে দোয়া ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, শোক সম্বলিত ব্যানার প্রদর্শন, কালো পতাকা উত্তোলন ইত্যাদি। এদিকে জেলহত্যা দিবস স্মরণে সকাল থেকে শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনের কর্মকর্তা, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ঢল নামে।