দেশে বর্তমানে মোবাইল ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ১৩ কোটির বেশি মানুষ। এর মধ্যে সামর্থ্যবানদের একাধিক ফোন থাকলেও প্রান্তিক মানুষ, বিশেষ করে চা-বাগানের শ্রমিক, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও পথশিশুদের মধ্যে প্রতি ১০০ জনের ৮৫ জনেরই রয়েছে নিজের একটি মোবাইল ফোন। প্রান্তিক এসব মানুষের মধ্যে প্রায় ৫২ শতাংশই ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করেন। ব্যবহারকারীদের মধ্যে শতভাগ মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সেবা ব্যবহার করেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। আর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে শতকরা প্রায় ২৫ জনই আয় বাড়াতে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। প্রান্তিক ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫৩ শতাংশই শুধু বিনোদনের জন্য ইন্টারনেট সেবা নেন। তাদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালানো, ভিডিও দেখা এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি নিয়ে পরিচালিত বেজলাইন জরিপের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। টেলিনর, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, গ্রামীণফোন ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল নরওয়ের অংশীদারত্বে এ জরিপ করা হয়। ১৩টি ফোকাস গ্রুপে ১১টি ইন্টারভিউ ও ৪ হাজার ৮০০ জনের ওপর জরিপ চালিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক সংলগ্ন জিপি হাউজে ‘ইনক্লুসিভ ডিজিটাল ফিউচার’ শীর্ষক এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে গ্রামীণফোন। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ইন্টারনেট ব্যবহার করে শতকরা ৬ জন সরকারি সেবা পেয়ে থাকেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪৬ শতাংশ সরকারি প্রশিক্ষণ, ৪১ শতাংশ অনুদান গ্রহণ, ২৯ শতাংশ স্বাস্থ্য তথ্য এবং ২৬ শতাংশ কৃষি কাজের তথ্য পেতে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। ৩৬ শতাংশ প্রান্তিক মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া, ভিডিও দেখা এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। সংবাদ জানতে ২৯ শতাংশ, দক্ষতা উন্নয়নে ১২ শতাংশ, চাকরি খুঁজতে ৩ শতাংশ এবং ১২ শতাংশ মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সেবা ও ৪ শতাংশ ই-মেইলভিত্তিক যোগাযোগের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এদিকে, জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশের আগে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অনলাইন নিরাপত্তা ও ডিজিটাল সাক্ষরতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে কার্যকর কৌশলগুলো নিয়ে আলোচনা হয়। প্রতিবেদনে আটটি প্রত্যন্ত ও সুবিধাবঞ্চিত কমিউনিটির জনগোষ্ঠীর জীবনাচরণ, বিভিন্ন প্রতিকূলতা ও তাদের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোতে আলোকপাত করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তানিয়া হক, গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান প্রমুখ।