কারওয়ান বাজার থেকে অফিসের কাজে ধানমন্ডি ২ নম্বর রোড যাচ্ছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সোহায়েব রহমান। এই রোডে সরাসরি কোনো বাস না থাকায় একমাত্র ভরসা রিকশা। গতকাল রোববার বিকেল তিনটার দিকে সোহায়েব যখন রিকশাচালকের সঙ্গে ভাড়ার দামদর করছিলেন, তখন একটু বিরক্তই হচ্ছিলেন। তারপর কয়েক রিকশা ঘুরে ৬০ টাকা ভাড়া ঠিক করলেন। তিনি বলেন, কারওয়ান বাজার থেকে ধানমন্ডি ২ নম্বরের দূরত্ব দুই কিলোমিটারের কিছু বেশি হবে হয়তো। কিন্তু ভাড়া চাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এ পথে ৫০ টাকার বেশি ভাড়া হওয়া উচিত না। বিএনপিসহ বিরোধী অন্যান্য দল দ্বিতীয় দফায় অবরোধের ডাক দিয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এ অবরোধের আগের রাতেই (শনিবার) রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে পাঁচটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। ফলে সকাল থেকেই রাস্তায় কম ছিল যানবাহনের সংখ্যা। আর তাই অফিসগামীদের একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে রিকশা। রিকশা এখন ঢাকার প্রধান সড়কগুলো দখল করেছে। বেশি ভাড়ায় যাত্রীদের বাধ্য হয়েই রিকশায় চলতে হচ্ছে। কারওয়ান বাজার মোড়ের সোনারগাঁও হোটেলের সামনে কথা হচ্ছিল রিক্সাচালক সেলিম হোসেনর সঙ্গে। তিনি ৬ মাস ধরে রিকশা চালাচ্ছেন ঢাকায়। তার নিজের বাড়ি উত্তরবঙ্গের গাইবান্ধা জেলায়। তিনি বলেন, অবরোধ ডাকায় আগের চেয়ে যাত্রী বেড়েছে। ভাড়াও বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আগে দিনে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা হতো সারাদিনে। এখন ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকাও হচ্ছে। ভাড়া বেশি নিচ্ছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, ভাড়া বেশি না নিলে চলবে কীভাবে? পাশ থেকেই আরেকজন বলে ওঠেন, সুযোগ পেলে, সুযোগ নিতে হবে। পাশে থেকে তখন আরেক রিকশাচালক বলে ওঠেন, অন্য সময় ভাড়ায় না হলে তো বাসে চলে যায়, তয় এখন তো রিকশা ছাড়া গতি নেই। শুধু কাওরানবাজার মোড়ের দৃশ্যই এমন নয়, রাজধানীর সায়েন্সল্যাব, শাহবাগ, জিগাতলা, হাতিরপুল, এলিফ্যান্ট রোডসহ প্রায় সর্বত্রই একই অবস্থা বিরাজ করছে। নিউমার্কেট রোডে প্রতিদিনই রিকশা চালান দিনাজপুরের কাশেম হোসেন। তিনি বলেন, ধানমন্ডি আর নিউমার্কেটেই সবসময় রিকশা চালাই। অন্যসময় জ্যামও থাকে, লোকও পাওয়া যায় না। আজ সব ঠিকঠাক, সকাল থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা আয় হয়েছে।