রংপুরে মাছ মাংস সবজির দাম বেড়েছে : বিপাকে সাধারণ মানুষ

প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্দুর রহমান মিন্টু, রংপুর

গত কয়েকদিনের ব্যবধানে রংপুরে মাছ, মাংসসহ কাঁচাবাজারের সব সবজির দাম বেড়েছে। পেঁপে ২০ থেকে ২৫ টাকা, মরিচ ২০০ টাকার উপরে ছিল তা কমে ১০০-১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, তাছাড়া সকল সবজির দাম বেড়েছে, বেড়েছে মাছ ও মাংসের দাম। এতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো।

শনি ও রোববার মাছ-মাংসসহ সবজি বাজারের বর্তমান অবস্থা জানতে রংপুর মহানগরীর সিটি বাজার, স্টেশন বাজার, লালবাগ বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। যা গত কয়েকদিন আগে ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, যা আগে ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। এছাড়া আলু ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা, সাদা আলু ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা, শিল আলু ৮০-৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে (অর্থাৎ বিগত দিন থেকে কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা করে)। এদিকে বেগুন, পটল, ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিও কপি, শিম ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে মাছের বাজারে দেখা যায়, আকার আবৃতি ভেদে প্রতিটা মাছের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা। রুইমাছ ২৭০ থেকে ৩৫০ টাকা, মৃগেল ২৩০ থেকে ২৮০ টাকা, পাঙাশ ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ১৮০, কাতল ৪২০ থেকে ৪৭০ টাকা, বাটা ২০০ থেকে ২২০ টাকা, শিং ৩২০ থেকে ৪৪০ টাকা, সিলভার কার্প ১৭০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুরগির বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি ১৯০ হতে ২০০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ৩০০ হতে ৩১০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৪৩০ থেকে ৪৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে খোলা বাজারে। যা বিগত দিনের চেয়ে ১০ থেকে ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। গরুর মাংসে তো হাত লাগালে হাত পুড়ছে, সাধারণ ক্রেতাদের বাজারে গরুর মাংস ৭০০ থেকে ৭২০ টাকা গত শুক্রবারে দাম অনেক সময় বেড়ে ৭৫০ বা তার বেশি হয়ে যায় এবং ছাগলের মাংস ৮০০ হতে ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

চালের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুচরা বাজারে স্বর্ণা (মোটা) চাল গত সপ্তাহের থেকে কেজি প্রতি এক টাকা থেকে দুই টাকা বেড়ে ৪৭ থেকে ৫০ টাকা, পাইজাম ৫৬ টাকা, জিরাশাইল ৬০-৬৫ টাকা, বিআর-২৮ ৬০ টাকা, মিনিকেট ৬৮ থেকে ৭০ টাকা ও নাজিরশাইল সামান্য কমে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

জানতে চাইলে সিটি বাজারের সবজি বিক্রেতা আরিফ মিয়া বলেন, সবজির উৎপাদন করতে প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অনেক বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে পরিবহন খরচও। এসব কারণে সবজি আমদানি করা না হলেও দাম কমছে না। বর্তমানের হরতাল, অবরোধের প্রভাবও পড়েছে সবজি বাজারে। শীতকালীন সবজি বাজারে আসতে শুরু করলেও তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ফলে দাম কোনোভাবেই কমছে না।

গালামালের দোকানি মিনহাজুল বলেন, বর্তমানে দাম বাড়ার মূল কারণ আমি মনে করছি হরতাল, অবরোধ ও রাজনৈতিক সংঘাত।

এমনিতেই দ্রব্য মূল্যে দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে এখন ভরা মৌসুমেও দাম কিছুটা কম হওয়ার কথা থাকলেও হরতাল, অবরোধ ও রাজনৈতিক সংঘাত বাঁধা হচ্ছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় উপ-পরিচালক আজহারুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করছি। আমরা বাজারে অবস্থান করলে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত দামে চাল, আলু, তেল বিক্রি হয়, আমরা চলে এলে বেশি দামে বিক্রি হয়। বেশি দাম নিচ্ছে সেরকম সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ আমাদের অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নিবো। আর নতুন সবজি কৃষক পর্যায় হতে আসে দামটা আসলে তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। একেবারে নতুন সবজির দাম কিছুটা বেশি থাকে পর্যায়ক্রমে কমে আসে। আমরা জনগণকে বাজার সম্পর্কে সচেতন করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।