ঢাকা ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বরিশাল সিটির বাসিন্দারা মশা আর দুর্গন্ধে নাকাল

বরিশাল সিটির বাসিন্দারা মশা আর দুর্গন্ধে নাকাল

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২৩নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ সাগরদি খালের তীর ঘেঁষে চলে গেছে টিয়াখালী সড়ক। বর্ষায় খালটিতে সড়ক ছুঁই ছুঁই পানি থাকে। আবার শীত এলে পানি শুকিয়ে যায়। এই খালের পানি বড় কোনো খালে গিয়ে নামতে পারে না। ফলে বদ্ধ জলাশয়ের মতো আটকে থাকে পানি। এতে মশার জন্মস্থান হিসেবে খুব উপযোগী বাস্তুসংস্থানে পরিণতি হয়েছে খালটি। শুধু মশার জন্মস্থান নয়, স্থানীয় বাসিন্দাদের ফেলা ময়লা-আবর্জনায় নদর্মায় রূপ নিয়েছে খালটি। বর্ষায় যেমন পানিবাহিত রোগের ছড়াছড়ি থাকে এই এলাকার মানুষের তেমনি শুকনো মৌসুমে খালে আটকে থাকা ময়লা-আবর্জনার উৎকট গন্ধে ত্রাহি দশায় দিনাতিপাত করতে হয়।

এমন চিত্র শুধু বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২৩নং ওয়ার্ডেই সীমাবদ্ধ নয়, নগরীর মধ্য থেকে প্রবাহিত মৃতপ্রায় জেল খাল, ভাটার খাল, সাগরদী খাল, আমানতগঞ্জ খাল, লাকুটিয়া খাল, উত্তর সাগরদী খাল, নবগ্রাম খাল, নথুল্লাবাদ খাল, চাঁদমারী খাল, ভেদুরিয়া খাল, তাজকাটি খাল, শোলনা খাল, সাপানিয়া খাল, হরিনা ফুলিয়া খাল, চৌপাশা খাল, চর বদনা খাল, টিয়াখালী খাল, পশ্চিম হরিনাফুলিয়া খাল, কাটাখালী খাল, কৃষ্ণচূড়া খাল, ইছাকাঠি খাল, জাগুয়া খাল, নাপিতের খালেরও একই চিত্র। ফলে দুর্গন্ধ, মশার আক্রমণ আর পানিবাহিত রোগের উপদ্রবে নাজেহাল সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাসিন্দারা।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বরিশাল জেলার সমন্বয়ক রফিকুল আলম বলেন, একটি সুষম নগরীর জন্য ২০ শতাংশ ফ্লাড ফ্লো জোন থাকার কথা। কিন্তু বরিশালে তা রয়েছে মাত্র ৭ শতাংশ। ফ্লাড ফ্লো জোনের একটি বড় উৎস হচ্ছে নগরীর মধ্য থেকে প্রবাহিত খালগুলো। দুঃখের বিষয় হচ্ছে বরিশালের মধ্য দিয়ে যাওয়া খালগুলো মেরে ফেলা হচ্ছে। এতে নগরবাসী চর্মরোগ, শ্বাসকষ্টের মতো রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনা আইন অনুসারে সব প্রাকৃতিক সম্পদের মালিক জনগণ হলেও সরকার এর দেখভালকারী। সে অনুসারে জেলা প্রশাসন খালগুলো পুনরুদ্ধারে ব্যবস্থা নেবে। তবে সিটি কর্পোরেশন খালগুলোর সৌন্দর্যবর্ধন কাজের দায়িত্বে রয়েছে। ফলে স্থানীয় সরকারের সমন্বয়ের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু বরিশালের প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে বড় ধরনের একটি দূরত্ব রয়েছে। ভাটারখাল এলাকার বাসিন্দা ইমরান হোসেন বলেন, নগরীর সবগুলো ড্রেন এই খালের সঙ্গে যুক্ত। ফলে নোংরা আবর্জনা এই খাল থেকে কীর্তনখোলায় গিয়ে নামে। আমরা খালটির পাশের বস্তিতে থাকি। এখানে এত বেশি মশা আর দুর্গন্ধ থাকা সম্ভব না। তারপরও উপায় না থাকায় থাকতে হচ্ছে। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা শাখার কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, পরিচ্ছন্নতার অংশ হিসেবে নগরীর খালগুলো বিভিন্ন সময়ে পরিষ্কার করা হয়। নগরীর মধ্য দিয়ে অনেকগুলো খাল বয়ে গেছে বিধায় এক সঙ্গে সব খাল পরিষ্কার করা সম্ভব না। তবে সর্বশেষ কবে খাল পরিষ্কার করা হয়েছে তা জানাতে পারেননি তিনি।

রেজাউল করিম বলেন, মেয়র পরিবর্তনের পর মশক নিধন অভিযান বন্ধ রাখা হয়েছে বিষয়টি তেমন নয়। আমরা ৩০টি ওয়ার্ডে দিন ভিত্তিক মশক নিধন অভিযান চালাই। যেমন ১ তারিখ ১ নম্বর ওয়ার্ডে। এভাবে যত তারিখ তত নম্বর ওয়ার্ডে মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত